কর্ণফুলীতে নীরবে দল গোছাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

জে জাহেদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০১৮, ০৮:৩২

ক্ষমতাসীন দলের নানা চাপ ও প্রশাসনের কঠোরতায় কোণঠাসা অবস্থায় নীরবে দল গোছাচ্ছে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা।

যদিও প্রকাশ্যে কোথাও সমাবেশ-মিছিল করছে না তারা, তবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুই দলই নিজেদের সংগঠিত করছে নানা কৌশলে।

উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে কয়েক কিস্তিতে ছাত্রদলের কমিটি দেয়া হয়েছে। শিবিরও নীরবে সংগঠিত হচ্ছে। রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন মামলায় দুই দলের অনেক নেতাকর্মী এখন কারাগারে। জানা যায়, চট্টগ্রাম কারাগারে এখন তিন শীর্ষ নেতাসহ ২৪ শিবিরকর্মী আটক রয়েছেন।

সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় থাকায় কর্ণফুলীতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা এখন সমাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান-আচারে একত্র হয়ে সাংগঠনিক কাজ সেরে নিচ্ছে।

কিছুদিন আগে নগরীর আমানত শাহ মাজারে দলের চেয়ারপারসনের জন্য আয়োজিত দোয়া মাহাফিলে দক্ষিণ জেলার কয়েক শত নেতাকর্মী জড়ো হয়ে নেতাদের নির্দেশনা নেন। সেখানে দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গোপনে বিশেষ করে শিবিরের সাংগঠনিক তৎপরতার বিষয়ে মাঠে নেমেছে প্রশাসনের গোয়েন্দা দল। কর্ণফুলী থানাও গত রবিবারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৈঠক করে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা মোকাবেলায় পুলিশ কঠোর অবস্থান নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

সামনে জাতীয় নির্বাচন। বিএনপি তাতে অংশ নেবে ধরে নিয়ে স্থানীয় নেতারা জনসংযোগ করছেন। জামায়াতও তাদের মতো করে বিভিন্ন দোকানে কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানে সেরে নিচ্ছে দলের নির্দেশনা আদান-প্রদান।

বিভিন্ন সামাজিক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে দলের সাবেক এমপি থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারণী মহলের অনেককে দেখা যায় উপস্থিত হতে। সেখানেও একরকম জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কাজ চলে নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিছুদিন আগে উপজেলার এসআর স্কয়ার ও রিভারভিউ কমিনিউটি সেন্টারে কয়েকটি বিয়েতে এ রকম দৃশ্য দেখা গেছে।

ওই সব অনুষ্ঠানে জামায়াত ও বিএনপির তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীসহ এলডিপির অনেক সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির একাধিক নেতার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কর্ণফুলীতে বিএনপি ও জামায়াতের অনেক কমিটি নেই বলে জানান তারা।

তবে মাঠে প্রশাসনের বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর নজর এড়িয়ে তারা নানা কর্মসূচি পালন করেন।

নির্বাচন সামনে রেখে কিছুদিন আগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির পাঁচ নেতা ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে করে দিকনির্দেশনা নিয়ে আসেন। আর তা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে দক্ষিণ জেলা বিএনপি তথা কর্ণফুলী উপজেলার নানা স্তরের নেতাকর্মীরা।

গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের আন্দোলনের সময় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় চট্টগ্রামে ৪০০ মামলা হয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নামে। এসব মামলায় জামাত-শিবিরের পাঁচ হাজারের বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাদের বেশির ভাগই এখন জামিনে মুক্ত।

তারা এখন প্রকাশ্যে না এলেও কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

জামিনে মুক্তি পাওয়াদের বিষয়ে পুলিশ সতর্ক আছে বলে জানান সিএমপির এডিসি প্রসিকিউশন নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, যারা জামিনে মুক্ত হয়েছে তাদের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী নজরদারির মধ্যে রেখেছে।

বিএনপি-জামায়াতের নীরব সাংগঠনিক কার্যক্রম কর্ণফুলীতে তাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করছে বলে ধারণা সাধারণ মানুষের ধারণা, যা আগামী নির্বাচনে মাঠে দৃশ্যমান হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা