আফতাফ মাহমুদ পদক পেলেন হাসান ইমাম ও ফেরদৌসী মজুমদার

প্রকাশ | ৩০ আগস্ট ২০১৮, ২২:২০ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০১৮, ২২:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক পেয়েছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম ও গুণী অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে পদক তুলে দেন নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের। ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শহীদ জায়া সারা আরা মাহমুদ।

৩০ আগস্ট সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদের ৪৭তম অন্তর্ধান দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও তার অন্তর্ধান দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়।

শহীদ আলতাফ মাহমুদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ২০০৫ সালে গঠিত হয় ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন’। প্রতিবছর এই ফাউন্ডেশন থেকে একটি পদক, উত্তরীয় ও আর্থিক সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে ‘শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক’ দেয়া হয়ে থাকে।

১৯৭১ সালের এই দিনে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের উল্টোদিকে নিজ বাড়ি থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর তিনি ফিরে আসেননি।

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র মতো বিপুল শ্রোতাপ্রিয় আবেগী গানসহ দেশাত্মাবোধের চেতনাময় অনেক কালজয়ী গানের স্রস্টা আলতাফ মাহমুদ।

‘চেতনা থেকেই মুক্তিযুদ্ধে যান আলতাফ মাহমুদ’

পদক গ্রহণকালে সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘কালজয়ী সুরকার আলতাফ মাহমুদ চেতনা থেকে মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত হয়েছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনী তার ওপর অমানষিক অত্যাচার চালায়। তাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে শরীরে সিগারেটের ছ্যাক দিলেও তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বলেননি।’

‘অনেকে অনেক কারণে মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত হয়েছিল। এমনকি কেউ ঘৃণা থেকে, কেউ ক্ষোভ থেকে, কেউ আত্মরক্ষার্থে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। আর আলতাফ মাহমুদ যুক্ত হয়েছিলেন চেতনা থেকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেই মহান চেতনাকেই ধারণ করেছেন।’

ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘আলতাফ মাহমুদের তৈরি করা সুর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একটিমাত্র গানের সুর দিয়েই তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন।’

আলী জাকের বলেন, ‘আলতাফ মাহমুদ শুধু শিল্পীসত্ত্বাকে লালন করে আয়েশি জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন সংগ্রামী জীবন। আমৃত্যু সেই জীবনকেই ভালোবেসেছেন। এখানেই তার বিশেষত্ব।’

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক পেয়েছেন- চিত্রগ্রাহক বেবি ইসলাম (২০০৫), সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. এনামুল হক (২০০৬), সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন (২০০৭), সঙ্গীতশিল্পী অজিত রায় ও সঙ্গীত পরিচালক খোন্দকার নুরুল আলম (২০০৮), সঙ্গীতশিল্পী সুধীন দা (২০০৯), স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক বিপুল ভট্টাচার্য (২০১০), সঙ্গীত পরিচালক আলম খান (২০১১), অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও নায়করাজ রাজ্জাক (২০১২), চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার ও সঙ্গীত পরিচালক মো. শাহ্‌নেওয়াজ (২০১৩), শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ও সঙ্গীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল (২০১৪), সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী ও কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক (২০১৫), অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (২০১৬), নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের ও শিল্প-সমালোচক মফিদুল হক (২০১৭)।

ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/জিএম/ডিএম