গাজীপুরে সেই মুচি জসিমের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:০৯

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের হাইলজোর ভূলেশ্বরটেক এলাকা থেকে মুচি জসিম নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের গুলাগুলিতে তিনি মারা গেছেন।

নিহত জসিম উদ্দিন ইকবাল কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার বনের জমি দখলকারী মুচি জসিম হিসেবে পরিচিত। তিনি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে কাপাসিয়া উপজেলার হাইলজোর ভূলেশ্বরটেক এলাকায় গুলির শব্দ শুনে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের টহল দল সেখানে যায়।

এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের মাথায় ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সেখানে তার স্ত্রী পরিচয় সনাক্ত করেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে জসিম ইকবাল পনেরো বিশ বছর আগে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় এসে একটি জুতা কারখানায় পিয়ন পোস্টে চাকরি নেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেই জুতা বানিয়ে ওই কোম্পানিতে সরবরাহ করতে শুরু করেন। জুতা তৈরির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করার কারণে এলাকাবাসীর কাছে মুচি জসিম নামে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। এর আগে বেশ কিছুদিন টোকাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন তিনি।

২০১৫ সালের ২১ আগস্ট চন্দ্রায় জাতির পিতা কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কালিয়াকৈর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। আর এই হত্যার ঘটনায় রফিকুল হত্যার আসামির ধরিয়ে দিতে থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করেন।

অল্প সময়ের ব্যবধানে পুলিশের বিশ্বস্ততা অর্জনের সুযোগে হত্যা মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে এলাকার মানুষজনকে জিম্মি করে ফেলেন। তার সহযোগিতায় কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানে না এমন মানুষজনকে ধরে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। জসিম মধ্যস্থতা করে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ করে টাকা আদায় করেন। এরপরই জসিমের শুরু হয় বেপরোয়া জীবন।

ভাওয়াল গড়ের বড় বড় শাল গজারী গাছ কেটে দখল করতে থাকেন বিঘার পর বিঘা জমি। এভাবে প্রায় তিন শত বিঘা বনের জমি দখল করে নেয় মুচি জসিম।

এরপর তার বিরুদ্ধে আদালতে বনবিভাগ ১৮ টি মামলা দায়ের করে। সাধারণ মানুষ থানায় জিডি করেন ৮টি। ১৮ টি মামলার মধ্যে ১৬টির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আর দুইটি মামলায় আদালত থেকে ৬ মাসের করে সাজা দেয়া হয়েছে। (ঢাকাটাইমস/০৭ সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :