‘কাউকে কাউকে’ মনোনয়নের ইঙ্গিত দিচ্ছেন শেখ হাসিনা

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:২৭ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আগামী নির্বাচনে দলের আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মনোনয়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ কথা জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এও বলে দিয়েছেন, আভাস দিলেও চূড়ান্ত মনোনয়ন নয় সেটি।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এ সময় এক প্রশ্নে তিনি এই তথ্য জানান।

আগামী ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে হাতে গোণা এক  ‍দুটি আসন ছাড়া প্রায় প্রতিটিতে আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে সক্রিয় আছেন। এদের মধ্যে যারা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য তারাই মনোনয়ন পাবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন পর্যযন্ত আমরা কাউকে মনোনয়ন দেইনি। ... তবে যারা এগিয়ে আছে, এমন অনেককে বলা হয়েছে, কিছু কিছু টিপস দেয়া হয়েছে, আপনি এই এই বিষয়গুলোতে নজর দিন, এই এই দুর্বলতা আছে। এগুলো পূরণ করুন এবং আরও গণমুখী হোন।’

‘তার মানে তাকে এমন ধারণা দেয়া হচ্ছে যে আপনি আরও ভালোভাবে কাজ করলে আরও কিছু ঘাটতি পূরণ করলে মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ধরনের আভাস ইঙ্গিত আমাদের লিডার শেখ হাসিনা কাউকে কাউকে দিয়েছেন।’

‘তাদেরকে আরও প্রস্তুতি জোরদার করতে। কিন্তু কাউকে মনোনয়ন একেবারে শিউর এমন আশ্বাস দেয়া হয়নি।’

 ‘মনোনয়নে নবীন টবীন অগ্রাধিকার নেই

মনোনয়নের ক্ষেত্রে নবীনদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘নবীন যারা তারা যদি জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যেই অগ্রাধিকার পাবেন, প্রায়োরিটি পাবেন।’

‘গতবার আমরা যারা মনোনয়ন দিয়েছি, এর মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং যারা জনগণের কাছে তাদের বা তাদের আশপাশের লোকের জন্য অসুবিধা করেছেন তাদের মধ্যে নবীনের সংখ্যাও একেবারে কম নয়। কাজেই নবীন টবীন বিষয় নয়, বিষয়টা হচ্ছে জনগণের কাছে কে কতটা গ্রহণযোগ্য, সেটাই নমিনেশন পাওয়ার পূর্ব শর্ত হিসেবে বিবেচনায় থাকবে।’

নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নতুন মুখের পরিমাণটা কেমন হবে- জানতে চাইলে রসিকতা করে কাদের বলেন, ‘পুরাতন যত বাদ যাবেন, সেটাই নতুন মুখ।’

নতুনদের অনুপাত কেমন হবে- এমন প্রশ্নে জবাব আসে, ‘সেটা আরেকটু সময় লাগবে ঠিক করতে।’

শিল্পপতিদেরকে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে আওয়মী লীগ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ করলে কি শিল্পপতি হতে পারবে না? ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবে না? দল করলে তার কি ব্যবসা করার কোনো অধিকার নেই? শিল্প কারখানা করার কোনো অধিকার নেই? তাহলে শিল্পপতি দোষের কী? কারখানা মালিক, বড় ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ করতে পারে, অনেকেই করেন।’

বিএনপি এলে আ.লীগ-জাতীয় পার্টি জোট

বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের মতোই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কীভাবে অংশ নেবে- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপি যদি বিএনপি না নির্বাচনে আসে, তাহলে জাতীয় পার্টি তো ঘোষণা দিয়েছে তারা আলাদা নির্বাচন করবে। আর বিএনপি আসলে তখন আসন বণ্টন, সমঝোতা এসব বিষয়গুলো আসবে।’

‘আসলে এখন সব কিছুই নির্ভর করছে মেরুকরণ কীভাবে হচ্ছে।  এখানে পোলারাইজেশনটা গুরুত্বপর্ণ।’

আগামী নির্বাচনে শরিকদেরকে আওয়ামী লীগ কতটা আসন ছাড়বে?- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘৬৫ থেকে ৭০। বলে দিয়েছি।’

বিদেশিদেরকে সীমার মধ্যে থাকার পরামর্শ

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশি বিভিন্ন শক্তির নানা উদ্যোগ ও চেষ্টার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন কাদের। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে, আমাদের নিয়ম নীতির মধ্যে আমাদের সংবিধানের আওতার মধ্যে কূটনৈতিক প্রয়াস যতটা সহনীয়, ততটাই আমরা অ্যাকসেপ্ট করব।’

‘আমরা একটা গণতান্ত্রিক দেশ, আমাদের এখানে সংবিধান আছে। আমাদের এখানে সংবিধান, আমাদের গণতান্ত্রিক নিয়ম নীতির সীমা পরিসীমা, এর বাইরে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড নিশ্চয় এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশই এগুলো সহ্য করে না ‘

‘কাজেই আমাদের সার্বভৌমত্ব যেখানে ক্ষুণ্ন হয়, সেখানে অবশ্যই সে ধরনের কূটনৈতিক প্রয়াস আমাদের বিদেশি বন্ধুরা চালাবেন না, এটাই আমরা তাদের কাছে আশা করি।’

তবে ‘বিদেশিরা সরকারের বিরুদ্ধে এটা তো বলা যাবে না’- এমন মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার অকুণ্ঠ সমর্থন পাচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত গণতান্ত্রিক দেশের সমর্থন আমরা পাচ্ছি, মুসলিম বিশ্বের সমর্থন আমরা পাচ্ছি। কাজেই বন্ধুত্ব আমরা বজায় রেখেই কাজ করছি। এর মধ্যে কথাবার্তা বলছি। সমস্যা হলে বন্ধু দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করব। কিন্তু আমরা কাউকে হস্টাইল (শত্রুতা) করতে চাই না। ’

ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি