কুমিল্লায় দর্জি দোকানির রহস্যজনক মৃত্যু

কুমিল্লা শহরতলীর দৌলতপুরে গিয়াসউদ্দিন (৫০) নামে এক দর্জি দোকানির হাত বাঁধা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা- তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে বাড়ির নিচতলায় ‘সৌদিয়া টেইলার্স’ থেকে নিহত গিয়াসউদ্দিনের ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় ভাই পুলিশ কর্মকর্তা মাহে আলম গিয়াসউদ্দিনকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে।

অপর দিকে স্ত্রীর স্বজনদের ভাষ্য, গিয়াসউদ্দিন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল।

নিহত গিয়াসউদ্দিন বুড়িচং উপজেলার কাবিলা এলাকার দুর্গাপুর (নোয়াপাড়া) গ্রামের তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে গিয়াসউদ্দিন ও তার স্ত্রী সাজেদা বেগমের সাথে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে স্বামী-স্ত্রী ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রী ও তার বড় ভাই পুলিশ কর্মকর্তা মাহে আলম মিলে গিয়াসকে মারধর করে হাত বেঁধে বাসার সামনে ডোবার (রেলওয়ের জায়গার পানি জমে থাকা গর্ত) মধ্যে ফেলে রাখে। দুপুর ১টার দিকে বাড়ির নিচতলায় ‘সৌদিয়া টেইলার্স’ থেকে হাত বাঁধা গিয়াসউদ্দিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গিয়াস উদ্দিনের এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। মেয়ে বিবাহিত ও শিশু পুত্র অশোকতলা স্কুলে পড়াশুনা করে।

পুলিশ কর্মকর্তা মাহে আলমের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

তবে তার স্ত্রী খোদেজা আলম জানান, গিয়াসউদ্দিন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। সে প্রায়ই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ করত। সকালে তারা আবারো ঝগড়া করে। সে আমার ননদকে (সাজেদা বেগম) মারধর করে। আমার স্বামী তার বোনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। পরে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

তিনি আরো জানান, ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রী তাকে মারধর করে হাত বেঁধে ডোবায় ফেলে রাখে। সেই রাগে-ক্ষোভে গিয়াসউদ্দিন সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।

নিহতের ভাই কবির হোসেন জানান, আমার ভাইকে হত্যা করেছে তার স্ত্রী সাজেদা বেগম ও তার ভাই পুলিশ কর্মকর্তা মাহে আলম। হাত বাঁধা অবস্থায় কেউ আত্মহত্যা করতে পারে না। এছাড়া তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন জানান, দুপুরে কুমিল্লা দৌলতপুর রেলওয়ে রোড এলাকার একটি বাসা থেকে এক গৃহকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আত্মহত্যা না হত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে এই ঘটনায় মৃত গৃহকর্তার স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)