নগদের জায়গা নিচ্ছে ডিজিটাল লেনদেন

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৫

কাওসার রহমান

উন্নত দেশগুলো অনেক আগেই ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদহীন অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত হালে এই ক্যাশলেস অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। ডিজিটালাইজেশনকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে তারা বাজার থেকে নোট তুলে নিয়ে ক্যাশলেস অর্থনীতি চালু করেছে। প্রতিবেশী দেশটিতে এই ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোর ফলে ভারতে ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণকারীর সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি কমেছে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন।

গোটা ভারতের অর্থনীতিতে এক ধরনের আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে ক্যাশলেস লেনদেন। বাংলাদেশ অবশ্য এক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। ভারতের চেয়ে অনেক আগেই চালু করেছে জিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেনের এক বিপ্লব সাধন হয়েছে। দেশের আনাচে-কানাচে চলে গেছে এই ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা। এতে অধিক মানুষ যেমন ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় এসেছে, তেমনি টাকা স্থানান্তর এখন মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। তবে ঠিক ক্যাশলেস লেনদেন বলতে যা বুঝায় সেখানে এখনো বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। তবে দেশের উচ্চবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তের মধ্যে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থা, তথা ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের ব্যবহার।

সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যাংকার এমনকি ব্যবসায়ীদের মাঝেও এখন নগদ টাকার ব্যবহার হয় না আগের মতো। এমন অবস্থা শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নয়। বরং বিভাগীয় এবং জেলা শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি অনেক থানা ও উপজেলায়ও শুরু হয়েছে এমন ক্যাশলেস লেনদেন। এতে বাড়ছে কার্ডের ব্যবহার। কমছে কাগুজে টাকা ও চেকের ব্যবহার। এভাবেই ক্যাশলেস লেনদেনের বিপ্লব ঘটছে নীরবে।

এর মূলে রয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং। এই সেবা এক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে ব্যাংকিং খাতে। ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে ব্যাংকিং সেবা। এ জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাংকিং আর এজেন্ট ব্যাংকিং। শুধু তাই নয়, ঘরে বসে ব্যালেন্স দেখা এবং ক্যাশ ট্রান্সফারের মতো কাজও হচ্ছে ব্যাংকে না গিয়েই। এছাড়া দুর্গম পাহাড়ি ও চরাঞ্চলের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় এনেছে এজেন্ট ব্যাংকিং। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবাদে বিদেশ থেকে স্বজনের পাঠানো টাকার জন্য প্রিয়জনকে অপেক্ষায় থাকতে হয় না দিনের পর দিন। জরুরি প্রয়োজনে টাকা উত্তোলন কিংবা জমার ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। বুথে ঢুকে ড্রপ বক্সে জমা করা যায় মুহূর্তেই। ফাস্টট্রাকের মাধ্যমেই ক্রেডিট কার্ডের বিল কিংবা গ্যাস-বিদ্যুতের বিল পরিশোধও জীবনকে করেছে আরও সহজ। এছাড়া এটিএম সেবা চালু হয়েছে আরও এক যুগ আগেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঞ্চয়ে উৎসাহী করতে চালু করা হয়েছে স্কুল ব্যাংকিং। কৃষক তার ভর্তুকির টাকা পাচ্ছেন ১০ টাকায় খোলা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে। বিধবা, বয়স্কসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতাও বিতরণ করা হচ্ছে ব্যাংকের মাধ্যমে।

গত ১০ বছরের ব্যবধানে ব্যাংকগুলোর শাখা খোলার ক্ষেত্রে গ্রাম এবং শহরের অনুপাত প্রায় সমান হয়ে গেছে। অর্থাৎ ব্যাংকিং সেবাকে গ্রামমুখী করতে শহরের পাশাপাশি গ্রামমুখী হচ্ছে ব্যাংকগুলো। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংক মিলে মোট ব্যাংক রয়েছে ৫৯টি। শহরের চেয়ে গ্রামেই এখন ব্যাংকের শাখা বেশি। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অভাবনীয় পুনর্জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।

আধুনিকায়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের ধারায় গ্রাহকসেবা ও চাহিদা পূরণে বেসরকারি ব্যাংকগুলো গতিশীল ভ‚মিকা রাখছে। সরকারি ব্যাংকগুলোও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে গ্রাহকসেবা আধুনিকায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকারি চাকরিজীবীরাও এখন বেতনের টাকা তোলেন এটিএম বুথ থেকে কার্ডের মাধ্যমে। কোনো ব্যাংকেই আগের মতো টাকা তুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের কারণেই গ্রাহকরা দ্রুত ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন।

অনলাইন পদ্ধতিতে যে কেউ এখন এটিএম (অটোমেটেড টেলর মেশিন) সেবার আওতায় যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো অঙ্কের টাকা তুলতে পারেন। তেমনি জমাও দিতে পারেন ড্রপ বক্সের মাধ্যমে। অর্থনীতির এই উৎকর্ষের ফলে কমছে দারিদ্র্য। বাড়ছে মানুষের গড় আয়। সহজ হচ্ছে জীবন ব্যবস্থা।

কেনাকাটার ক্ষেত্রেও নগদ টাকার স্থান দখল করে নিচ্ছে ‘ইলেকট্রনিক মানি’-খ্যাত ক্রেডিট বা ডেবিড কার্ড। নগদ টাকা বহন ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় ক্রেডিট বা ডেবিড কার্ডের প্রতি মানুষের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি থেকে মুক্তি ও জামানত ছাড়া ঋণ সুবিধার কারণে তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের ঋণের চাহিদা বেশি। আবার উচ্চ সুদ হার ও নামে-বেনামে হিডেন চার্জ আরোপ করে ব্যাংকও ভালো আয় করছে এই খাত থেকে। ফলে এক বছরে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ নেওয়া বেড়েছে ২৩০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকদের মাঝে ঋণ বিতরণ করেছে ৩ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা ঋণ নিয়েছিলেন ৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৩১টি ব্যাংক গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে।

তবে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে ক্যাশলেস লেনদেনে যতটা গতি পাওয়ার কথা ততটা পাচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ হলো ক্রেটিড কার্ডের উচ্চ সুদ, নানা হিডেন চার্জ, সর্বত্র কার্ড ব্যবহারের সুযোগ না থাকা এবং কার্ডে কেনাকাটার ক্ষেত্রে পণ্যমূল্য বেশি রাখা। সামগ্রিক ব্যাংক খাতের ঋণে সুদের হার এখন সিঙ্গেল ডিজিটের কাছাকাছি নেমে এলেও ক্রেডিট কার্ডের ঘোষণা দিয়ে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আদায় করছে ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিপরীতে ২৭ থেকে ২৮ ধরনের ফি (মাশুল) নিচ্ছে। ব্যাংকভেদে ‘ফি’র নাম ভিন্ন হলেও চার্জ কাটা হয় প্রায় একই হারে। অনেকে নগদ টাকার বদলে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পণ্য কেনেন। যদিও ব্যাংকের কাছে এই ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে একটি পণ্য। অন্যান্য ঋণে সুদের হার বার্ষিক হারে আরোপিত হলেও ক্রেডিট কার্ডে সুদ দিতে হয় মাসিক ভিত্তিতে।

এর বাইরে আবার রয়েছে নানা হিডেন চার্জ। প্রতি কেনাকাটায় কার্ড ব্যবহারের পর এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়। আবার একইভাবে মাস শেষে পুরো মাসের বিল জানানো হয়। এই তথ্য প্রদানের জন্যও ব্যাংকগুলোকে বছরে একটি নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হয়। আর যদি কেউ নির্দিষ্ট সময়ে টাকা জমা দিতে না পারেন তার জন্য রয়েছে জরিমানাসাহ নানা মাশুল। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করতে গেলে দেখা যায় পণ্যমূল্য বাজারের চেয়ে তুলনামূলক বেশি পড়ে। প্রথমত ক্রেডিট কার্ড মেশিনের জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রতি লেনদেনে দুই থেকে আড়াই শতাংশ হারে চার্জ দিতে হয়। আবার সর্বত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সুযোগ এখনো সীমিত। ইচ্ছে করলেই সব জায়গায় কার্ড দিয়ে কেনাকাটা বা মূল্য পরিশোধ করা যায় না।

যে সব স্থানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হয়, সেসব আউটলেট অভিজাত এবং সুপারশপ জাতীয়। ফলে ওই সব স্থানে পণ্যের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে পণ্য কিনতে হয়। তার ওপর আবার ভ্যাট দিতে হয়। অথচ বাজারে সাধারণ দোকান থেকে ওই সব পণ্য কেনাকাটা করলে পণ্যের গায়ের মূল্যের চেয়ে কম মূল্য রাখা হয়। তাছাড়া বাড়তি ভ্যাট দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তাই ক্রেডিট বা ডেবিড কার্ডকে উৎসাহিত করতে হলে এসব কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার ক্ষেত্রে অবশ্যই ছাড়ের সুবিধা থাকতে হবে। তা না হলে এই কার্ড ব্যবহার কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। সর্বত্র কার্ড ব্যবহার করা যায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে। আউটলেটগুলো যাতে ক্রেডিট কার্ড মেশিন রাখাতে উৎসাহিত হয় এজন্য তাদের আর্থিক সুবিধা দিতে হবে। কারণ ব্যাংকে তো কার্ডের লেনদেনের টাকা জমাই হচ্ছে। তাহলে ক্রেডিট কার্ড মেশিন ব্যবহারের জন্য তাকে আবার বাড়তি চার্জ দিতে হবে কেন?

উচ্চ সুদ বা হিডেন চার্জের ব্যাংকের বক্তব্য হলো ক্রেডিট কার্ডে সুদ বেশি হলেও জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়া যায়। এজন্য এ খাতে ঝুঁকিও বেশি। এই ঝুঁকি সৃষ্টির জন্য ব্যাংকগুলোই দায়ী। কারণ ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ড দিয়েছে। ফলে অনেক ক্রেডিট কার্ডের ঋণখেলাপি হয়েছে। ব্যাংকগুলো এখনো ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ক্ষান্ত থাকে না, কার্ডধারীকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে ঋণ নিতে। অনেকে ব্যাংকের এই প্রলোভনে পড়ে ঋণ নিয়ে ফেঁসে যায়। সময় মতো দিতে পারে না। ফলে খেলাপি হয়ে যায়। আর মাসে মাসে সুদ বাড়তে থাকে। তাই গ্রাহকের ট্র্যাক রেকর্ড দেখে যাচাই বাছাই করেই ব্যাংকগুলোর উচিত ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা।

ভারতে ক্যাশলেস লেনদেন চালুর কারণে এখন ৭০ শতাংশ লোক ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে। অতীতে গ্রাহকরা ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতো। কিন্তু এখন ক্যাশলেস লেনদেন শুরু হওয়ায় ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে যাচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল পেমেন্ট চালু হওয়ায় ভারতে বেনামি ঋণ কমে আসছে। বাংলাদেশেও জোরেশোরে এই ক্যাশলেস লেনদেনে যাওয়া উচিত। এতে যেমন দুর্নীতি কমবে, তেমনি ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে সময়ও বাঁচবে। একই সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচও কমবে। কার্ডে বা ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে পণ্য ক্রয়কে উৎসাহিত করা উচিত। এক্ষেত্রে কার্ডের সার্ভিস চার্জ পুরোপুরি তুলে দেওয়া যেতে পারে।

ক্যাশলেস ব্যবস্থা যত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে দেশের অর্থনীতিরও ততই গতি সঞ্চার হবে।

ক্যাশলেস অর্থনীতির সব কাঠামো ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। তাই এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে। ক্যাশলেস অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে ব্যাংকের কাছে অধিক মূলধন থাকবে, যা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। এই অর্থ বিকাশমূলক কাজে এবং বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, ক্যাশলেস অর্থনীতিতে আধুনিক ব্যাংকিং ও কর ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হবে। এই প্রক্রিয়ার ফলে ব্যাংকের কার্যকরী উন্নতি হবে এবং ট্যাক্স প্রক্রিয়া আরও ভালো হবে। এর ফলে আর্থিক লেনদেনের ওপর নজর রাখা সম্ভব হবে। যখন নোটের চলন সমাপ্ত হবে অর্থাৎ সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে যাবে তখন চুরি-ডাকাতির মতো অপরাধও কমে যাবে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন নোট ছাপানোর জন্য বিপুল গাছ কাটা হয়। ক্যাশলেস অর্থনীতির ফলে পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে। দুর্নীতির সবচেয়ে বড় কাঠামো হলো দালালচক্র। ক্যাশলেস অর্থনীতিতে লেনদেন ডিজিটাল এবং সহজবোধ্য প্রক্রিয়া হবে, যার ফলে এই দালালদের সংখ্যাও কমবে।

ক্যাশলেস অর্থনীতির আরেকটি সুবিধা হলো বাড়িতে বা অফিসে বসে আপনি শপিং, টিকিট বুকিং, বিল পরিশোধ করতে পারবেন। ক্যাশলেস অর্থনীতির ফলে সব থেকে বেশি লাভবান হবে ই-কমার্স। অর্থনীতির এই কাঠামো ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল যার ফলে ই-খাতে অপ্রতিরোধ্যভাবে উন্নতি আসবে। ডিজিটাল পেমেন্টে পরোক্ষভাবে নোট ও তার পরিবহনে ব্যয়ের ক্ষমতা অনেকটা কমে যাবে। লেনদেন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আসবে। ক্যাশলেস অর্থনীতিতে সরকারের কর সংগ্রহ করতে সুবিধা হবে। সর্বোপরি অর্থনীতি ব্যবস্থায় সব থেকে বড় ক্ষতি হয় জাল নোট ছাপার কারণে। কিন্তু ক্যাশলেস অর্থনীতিতে টাকা সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে যাওয়ার ফলে এই নকল নোট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে।

কাওসার রহমান: নগর সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ