ডাকসু নির্বাচনে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল: ঢাবি ভিসি

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:০৮ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

হাইকোর্টের নির্দেশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠন ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান। একইসঙ্গে তিনি এও বলেছেন, ‘আদালতের বিষয়ে এর বেশি মন্তব্য করতে চাই না।’

হাইকোর্টের নির্দেশের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠন ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ না নেওয়ায় উপাচার্য আখতারুজ্জামান, রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান ও ট্রেজারার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে বুধবার বিকালে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে।

বুধবার বিকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রবিবার এই মামলার শুনানি হবে।

মামলা হওয়ার পর ঢাবি উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশের পর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল। তবে সেটা কোনও না কোনও কারণে হয়নি। আর আদালতের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’

আইনি নোটিশের জবাব না দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, ‘জবাব দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রশাসনিকভাবে কেন সেটা করা হয়নি, আমি দেখব সেটা।’

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু নির্দেশের পরও নির্বাচন অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ না নেওয়ায় সংশ্লিষ্টদেরকে গত ৪ সেপ্টেম্বর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু সে নোটিশেরও কোনও জবাব দেয়নি ঢাবি কর্তৃপক্ষ। এরপর আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।

ডাকসুর বিধান অনুযায়ী প্রতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় ২৮ বছর আগে ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়। আর সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। এরপর প্রতিটি রাজনৈতিক সরকার এই নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও আর ভোট হয়নি।

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা নেই বলে মনে করা হয়। এতে মূলধারার রাজনীতিতে যেমন নতুন নেতা তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি ছাত্র সংগঠনগুলোও শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রতি উদাসীন হয়ে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে বলেও নানা সময় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে আসছেন।

ডাকসু নির্বাচন চেয়ে নানা সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গত সমাবর্তনে এই নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও। কিন্তু এরপরেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

২০১২ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনও জবাব না দেওয়ায় ২০১২ সালে ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।

এরপর একই বছরের ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে বিবাদী করা হয়।

ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/ডিএম