৮৬ বছরের প্যারালাইসিস রোগী নাশকতা মামলার আসামি

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৬ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৩

প্রতীক ওমর, বগুড়া

নতুন করে মামলার জালে পড়েছে বগুড়ার বিএনপি। গেল এক সপ্তাহে ছয় উপজেলায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ১১ মামলা হয়েছে। অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে আরও শ পাঁচেক। মামলায় ৮৬ বছরের প্যারালাইসিস রোগীকে করা হয়েছে নাশকতা মামলার আসামি।

জানা গেছে, সব কটি মামলার বাদী পুলিশ। নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয় এসব মামলায়।
এসব মামলায় বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রের আশপাশে বসবাসকারী বিএনপি-জামায়াতের প্রভাবশালী নেতাদের বেশি আসামি করা হয় বলে অভিযোগ বিএনপির।

৮৬ বছরের প্যারালাইসিস রোগী, ছয় বছর আগে মালয়েশিয়া চলে গেছেন এমন ব্যক্তি, এবারের হজ শেষে এখনো দেশে ফেরেননি এমন ব্যক্তিদের নামও পাওয়া গেছে এসব মামলায়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ধুনট থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের আওতায় নাশকতার মামলা করে পুলিশ। এতে আব্দুল খালেক সরকার (৮৬) নামের বৃদ্ধ প্যারালাইসিস রোগীকে আসামি করা হয়। তার বয়স দেখানো হয় ৩৮ বছর। আব্দুল খালেক সরকার উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত মোবারক আলী সরকারের ছেলে। ওই মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

আবদুল খালেকের পরিবার জানায়, তিনি প্যারালাইসিস রোগী হিসেবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের শয্যায় ৩১ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত  চিকিৎসা নেন। বর্তমানে তিনি বাড়িতে শয্যাশায়ী। তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। তাকে আসামি করার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তার পরিবার।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার কান্তনগর বাজারে মাদকবিরোধী অভিযান ও থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে আসে থানা পুলিশ। এ সময় নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ারপাড়া রহমানিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার পেছনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠকে নাশকতার পরিকল্পনা করছে বলে খবর পেয়ে রাত ৮টায় অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

একই রকম মামলা হয়েছে বগুড়া সদর থানায়। এখানে নাশকতার মামলা হয়েছে তিনটি। এতে সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য দুই মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারের নাম উল্লেখ আছে।

গাবতলী থানার মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, উপজেলা চেয়ারম্যান মোরশেদ মিল্টন, পৌর চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, শাজাহানপুর উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক আবুল বাশার, তালোড়া বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন সরকার, তালোড়া পৌর চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনকে আসামি করা হয়।
এসব মামলায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম দেয়া হয় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় জেলে থাকলেও কোনো কর্মসূচি বিএনপি দেয়নি। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই এসব মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/মোআ)