শিউলী-শিল্পী হত্যারহস্যের জট এখনো খুলেনি

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৩২

জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গার্মেন্টস কর্মী শিউলী হত্যার এক মাস ও পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী শিল্পী হত্যার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও হত্যা দুটির রহস্যের জট খুলেনি এখনও। রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তৎপরতার কথা জানালেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ।

গত ২৬ জুলাই সকাল ৭টার দিকে বাসযোগে পুষ্টকামুরী চরপাড়া গ্রামের শরীফ খানের স্ত্রী গার্মেন্টস কর্মী শিউলী তার কর্মস্থল গোড়াই শিল্পাঞ্চলের কমফিট কম্পোজিট গার্মেন্টসে যাচ্ছিলেন। পথে বাসে আর্তচিৎকারের কিছুক্ষণ পর দেড় কিলোমিটার দূরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার বাওয়ার কুমারজানী থেকে শিউলীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে ১৩ আগস্ট শিল্প পুলিশে কর্মরত ছুটিতে আসা মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের এএসআই মামুন দুপুরের খাবার শেষে তার নিজ কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে মামুন এবং তার স্ত্রী শিল্পীকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তাদের কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়ার পর সন্ধায় শিল্পী মারা যান। উন্নত চিকিৎসার জন্য মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গার্মেন্টস কর্মী শিউলী হত্যার ১৫ দিন পর পুলিশ বাসটি আটকসহ  চালক রনি শেখ ও তার ছোট ভাই বাসের হেলপার রানা শেখকে গ্রেপ্তার ও চালকের ভাষ্যে শিউলীর সহকর্মী আরিফকে গ্রেপ্তার করে। বাসচালকের ভাষ্য মতে, সহকর্মী আরিফই শিউলীকে  ধস্তাধস্তির এক পর্যায় বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ বাস চালকের বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে আরিফকে দ্বিতীয়বার রিমান্ডে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ শিউলীর অন্য একাধিক সহকর্মী এবং আত্মীয়দের ভাষ্য মতে, আরিফ ঘটনার দিন তাদের সাথেই একসাথে অন্য বাসে কর্মস্থলে গিয়েছিলেন। তার আবার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়ে।

এদিকে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের শিল্প পুলিশের এএসআই ফিরোজ আল মামুনের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী শিল্পী বেগম খুন হওয়ার ঘটনায় শিল্পীর ভাই মোস্তফা এএসআই মামুন, শিল্পীর দেবর সানি, শ্বশুর আবুল কাশেম এবং শাশুরি অজুফা বেগমকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। এই মামলায় গ্রেপ্তার আবুল কাশেম পুত্রবধূ শিল্পী হত্যার দায় স্বীকার করে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কুমারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

নিজের ভারসাম্যতা যিনি ঠিক রাখতে পারে না, সেই অসুস্থ আবুল কাশেম কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাবে এই প্রশ্ন নিহতের স্বজনদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

মির্জাপুর থানার ওসি একে এম মিজানুল হক বলেন, শিউলী এবং শিল্পী হত্যা মামলায় নতুন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। নতুন কোন প্রমাণ বা তথ্য পেলে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)