কুইন্স হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২৩ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:১৬

যশোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

যশোরের কুইন্স হসপিটালে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা পিংকি (৩০) নামে এক প্রসূতি বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। ভেজাল ইনজেকশন পুশ করার দায়ে তিনি মারা যান বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।    ডা. জাকির নামে এক চিকিৎসকও একই দাবি করেছেন।

নিহত পিংকি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহিতকুমার নাথের পুত্রবধূ। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর আট বছরের মাথায় সন্তান ধারণ করতে সক্ষম হন  পিংকি।

পিংকির স্বামীর নাম পার্থপ্রতীম দেবনাথ রতি। প্রায় আট বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল।

রতির ভাই রানানাথ জানান, অনেক চিকিৎসার পর পিংকি গর্ভধারণ করেন। তিনি গাইনি চিকিৎসক জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাক্তার জাকিরের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পিংকি একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন।

সন্ধ্যায় ডা. জাকির প্রসূতির জন্য ‘ওমেপ’ নামে একটি ইনজেকশন (ওমিপ্লাজন গ্রুপ) আনতে বলেন। রাত নয়টার দিকে হাসপাতালের নার্স জেসমিন ওই ইনজেকশনটি প্রসূতির শরীরে পুশ করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন পিংকি।

ডাক্তার জাকির দাবি করছেন, রোগীর স্বজনরা পাশের একটি ফার্মেসি থেকে ‘ওমিজিড’ নামে ইনজেকশন কেনেন। যেটি ছিল ভেজাল। এই ‘ভেজাল’ ইনজেকশন পুশ করায় প্রসূতির মৃত্যু হতে পারে।
এদিকে, মোহিতনাথের পুত্রবধূর অপমৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বহু লোক চড়াও হয় কুইন্স হসপিটালে। তারা হাসপাতালটির সপ্তম তলায় উঠে আসবাবপত্র তছনছ করে। ভেঙে ফেলে জানালার গ্লাসগুলো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলার সময় রোগি ও তাদের স্বজনরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। হাসপাতালে অবস্থানরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা পালিয়ে যান।

খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ হাজির হয় কুইন্স হসপিটালে। তারা উত্তেজিত লোকজনকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) আবুল বাশার হাসপাতালটিতে ভাঙচুরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 
রানানাথ জানান, তার সদ্যোজাত ভাইজি সুস্থ আছে। তাকে বাড়িতে নেয়া হয়েছে। প্রসূতি পিংকির লাশও নিয়ে গেছে তার পরিবার।

কুইন্স হসপিটালের ব্যবস্থাপক মিঠু সাহা দাবি করেন, লোকজন উত্তেজিত হয়ে সামান্য ভাঙচুর করেছেন। এতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
কাছে তিনি দাবি করেন, ভুক্তভোগীদের কেউ ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত না। ‘তৃতীয় পক্ষ’ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবীর কবুর বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

ঢাকাটাইমস/১৪ সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর