হারিকেন ফ্লোরেন্স: বহু লোককে সরালেও বন্দিরা জেলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:৪১

আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন ফ্লোরেন্স ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকুলে আঘাত হানতে শুরু করেছে, আর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ঘুর্ণিঝড়টি স্থলভাগ স্পর্শ করবে। উপকূলীয় উত্তর এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্য দুটির ১৭ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

জলোচ্ছাস আর বৃষ্টির ফলে নিউ বার্ন নামে একটি উপকুলীয় শহরের কিছু অংশ এর মধ্যেই ৯ ফুট পানির নিচে চলে গেছে। অন্তত দু'লাখ লোকের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগের এই ঝড়ে অনেক মানুষের মৃত্যুর আশংকা করা হচ্ছে।

এই এলাকাগুলো থেকে লোকজনের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, কিন্তু দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় কমপক্ষে দু'টি কারাগারের বন্দীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়নি।

সেখানকার কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, কারাবন্দীদের অন্য কোনো জায়গায় নেয়া হবে না। দক্ষিণ ক্যারোলাইনার কারেকশন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা মনে করছেন, অন্য কোথাও নেয়ার চেয়ে বন্দীরা কারাগারেই নিরাপদ থাকবে।

তবে উত্তর ক্যারোলাইনা এবং ভার্জিনিয়ার কিছু কারাগার থেকে বন্দীদের ইতিমধ্যেই নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

দক্ষিণ ক্যারোলাইনার কারগার থেকে বন্দীদের নিরাপদ আশ্রয়ে না নেয়ার বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।

এরআগে ২০০৫ সালে ভয়াবহ হারিকেন ক্যাটরিনা আঘাত হানলে কারাগারগুলোতে হাজার হাজার কয়েদী চরম বিপদে পড়েছিল। কমপক্ষে ১ হাজার বন্দীর মৃত্যু হয়েছিল। এই তথ্য একজন পিএইচডি'র শিক্ষার্থী টুইট করলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। ফেসবুকেও তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

ক্যাটরিনার আঘাতে কী ঘটেছিল বন্দীদের কপালে?

হারিকেন ক্যাটরিনা ২০০৫ সালে আঘাত হেনেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। তখন ভূমিধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এরসাথে বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। কমপক্ষে ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

হারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল নিউ অরলিন্স শহরে। বন্দীরা কারাগারের সেলের ভিতরে বন্ধ অবস্থায় ছিলেন। বন্দীদের বেশিরভাগই ছিলেন বিভিন্ন অভিযোগে বিচারের অপেক্ষায় অর্থ্যাৎ তারা তখনও অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হননি।

ঝড়ের আঘাতের সাথে সাথে বিদ্যৎ চলে যায়। কারাগারের জেনারটরগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে কারাগারের সেলগুলোতে বন্ধ রাখা বৈদ্যুতিক দরজাগুলোও কাজ করছিল না। বন্দীরা পরিত্যক্ত একটি কারাগারে বন্যার পানির ভিতরে ছিলেন এবং ভুগছিলেন খাবারের সংকটে।

শেষপর্যন্ত ঝড়ে আঘাত হানার চারদিন পর অরলিন্স শহরের কারাগার থেকে বন্দীদের অন্য জায়গায় সরানো হয়েছিল। সে সময় বন্দীদের অনেকে বলেছিলেন, তারা কারাগারের ভিতরে বহু বন্দীর মৃতদেহ দেখেছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছিল যে ৫১৭ জন বন্দী নিখোঁজ হয়েছে।

বন্দীদের কেন কারাগারেই রাখা হয়?

১৯৯৯ সালেও যখন হারিকেন আঘাত হেনেছিল, তখনও দক্ষিণ ক্যারোলাইনার কারগার থেকে বন্দীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়নি। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হয়েছে।

দক্ষিণ ক্যারোলাইনার কারাগারের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বন্দীদের অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নেয়াটা ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এছাড়া বন্দীদের সরিয়ে নিতে অনেক লোকবল প্রয়োজন, দুর্যোগের সময় সেই লোকবল পাওয়াও কঠিন।

বন্দীদের পরিবহন করাও অনেক জটিল বলে কর্তৃপক্ষ মনে করে। বন্দীদের কারাগার থেকে না সরানোর ব্যাপারে এসব যুক্তি দিয়েছে দক্ষিণ ক্যারোলাইনার কর্তৃপক্ষ। সূত্র: বিবিসি

ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

শেষ মুহূর্তে ভারত সফর স্থগিত করলেন এলন মাস্ক

ট্রাম্পের বিচার চলাকালীন আদালতের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দিলেন যুবক

ইরান-ইসরায়েল দুপক্ষই মিথ্যাচার করছে: এরদোয়ান

ইসরায়েলকে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের’ জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি ইরানের

প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে বিস্ফোরক আতঙ্ক, সন্দেহভাজন আটক

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ 

ইরানে হামলায় অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই: ইরানি কর্মকর্তা

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :