মেয়েকে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় মাকে গলা কেটে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:২০

বাঁশের ঝাড়ু বিক্রি করেই চার সদস্যের সংসার চালান আব্দুল মান্নান। দুই মেয়ে মনিকা ও মিম। এমনও দিন যায় যেদিন তিনি ঘরে ফেরেন না, ফিরলেও রাত ভোর হয়। মনিকার বয়স ১৪ আর মিমের ৫। এক দিকে মনিকা দেখতে বেশ সুন্দর, অন্যদিকে ঝাড়– বিক্রেতা গরিব মানুষের মেয়ে। এ কারণের কুদৃষ্টি ফেলে প্রতিবেশী জসিমের ছেলে মোহন। সুযোগ বুঝে মনিকার উপর ঝাপিয়ে পড়ে মোহন। ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

প্রভাবশালী জসিম ছেলের অপকর্ম স্থানীয়ভাবে ঢাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু মনিকার মা তাতে রাজি হননি। মনিকার বাবা থানায় মামলা করলে জসিমের ছেলে মোহনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মোহনের বয়স ১৬ হওয়ায় তাকে আদালতের নির্দেশে তাকে পাঠানো হয় যশোর কিশোর সংশোধনাগারে। আর এ কারণেই জসিম ক্ষুব্ধ হন মনিকাদের পরিবারের ওপর। তারাও বিষয়টি বুঝতে পেরে মনিকাকে পাঠিয়ে দেন তার নানার বাড়িতে।

এদিকে মোহনের বাবা জসিম একই গ্রামের বাচ্চু ওরফে পাইতা, আমিনুর ওরফে আনু, এবং আতিকুরের সাথে শলাপরামর্শ করে মনিকার মা আফরোজাকে খুন করার জন্য। মনিকার মা আফরোজাকে খুন করতে পারলে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দিতে চান জসিম। ধর্ষণের চেষ্টা মমলার প্রধান স্বাক্ষী ছিলেন বাচ্চু ওরফে পাইতা। বাচ্চুর ছিল মনিকাদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত। তাকে বিশ্বাস করতেন আফরোজা ও তার স্বামী। মান্নানের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের দেখভাল করতো বাচ্চু ওরফে পাইতা। কিন্তু এক লাখ টাকার লোভে পাইতা হাত মেলায় জসিমের সাথে। আফরোজাকে খুন করার পরিকল্পনায় সায় দেয়।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতেও ঘরে ফেরেনি মনিকার বাবা মান্নান। পাশের গ্রামে ঝাড়– তৈরির উপকরণ সংগ্রহে ব্যস্ত ছিলেন। আফরোজা ছোট মেয়ে মিমকে নিয়ে বেঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত ১১টার পর ওরা চারজন মনিকাদের ঘরের দরজার টিন কেটে ভিতরে ঢুকে পড়ে। এরপর বাচ্চু ওরফে পাইতা আফরোজার পা ধরে শক্ত করে। জসিম মাথা চেপে ধরে। আতিকুর মুখ চেপে ধরে। আর আমিনুর ধারালো ছুরি দিয়ে আফরোজার গলা কাটে। পরদিন সকালে ছোট মেয়ে মিম প্রতিবেশীদের ডেকে বলে তার মার গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তারা খবর দেয় পুলিশে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। ৫ বছরের মেয়ে মিম ছাড়া আর কেউ ছিল না ঘটনার স্বাক্ষী।

মিমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ বাচ্চু ওরফে পাইতাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি অকপটে স্বীকার করেন খুনের ঘটনা। পরে গ্রেপ্তার করা হয় জসিমকে। এরমধ্যে খবর পেয়ে আত্মগোপন করে অপর দুইজন। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দেন তারা দুজন।

গ্রেপ্তারকৃত বাচ্চু ওরফে পাইতা ও জসিমুদ্দিন

বগুড়ার পুুলিশ সুপার আশরাফ আলী ভুঞা জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে খুনের দায় স্বীকার করেছে। ঘটনার সময় আফরোজার ছোট মেয়ে মিমের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু খুনিরা তাকে হত্যা করেনি। মিমি বেঁচে যাওয়ায় পুলিশকে অনেক তথ্য দিয়েছে। খুব শিগগির খুনের সাথে জড়িত অপর দুজন গ্রেপ্তার করা হবে।

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :