দুই শিক্ষকের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২৬৫!

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৩৭ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৪৬

শাহ আলম শাহী, দিনাজপুর

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মৌলভীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬৫ জন। ছয় শ্রেণিতে পাঠদান করা হয় বিদ্যালয়টিতে। মাত্র দুই শিক্ষক দিয়েই গত দুই বছর ধরে চলছে এ বিদ্যালয়।

শিক্ষক সংকট হলেও শিক্ষক সংকট নিরসনে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিনে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে পাঁচ পদের বিপরীতে প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক কর্মরত আছেন। আগে চার শিক্ষক কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে দুইজনের দায়িত্বে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের অন্যত্র বদলি করা হয়। এরপর থেকে অচলবস্থার সৃষ্টি হয় বিদ্যালয়টিতে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ শিক্ষক  হাফিজুর রহমানকে উপজেলার একই ওয়ার্ডের দলাইকোটা সবুজ নব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিক্ষিকা রেবেকা খানমকে পার্শ্ববর্তী আনন্দ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

পরে কুড়িগ্রাম জেলা থেকে একজন প্যানেল শিক্ষিকা শেফালী খাতুনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ওই বছরের ২১সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের সকল প্যানেল শিক্ষককে নিজ জেলায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

এর পর থেকে দুইজন শিক্ষক দিয়েই চলছে ২৬৫ শিক্ষার্থীর প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান।

প্রধান শিক্ষককে প্রায় সময় প্রশাসনিক কাজে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। এসময় একজন শিক্ষককে গোটা বিদ্যালয়ের ক্লাস নিতে হয়।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক খন্দকার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বারবার অবহিত করা হলেও কাজ হয়নি।

অফিসিয়াল কাজ, উপবৃত্তি, শিশু জরিপ, স্কুল ফিডিং কর্মসূচীর বিস্কুটের হিসাব প্রতিদিন হালনাগাদসহ ছয় শেণির পাঠদান সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি, তবে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত সমস্যার সমাধান জটিল।

দিনাজপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক স্বল্পতা কর্তৃপক্ষের নজরে আছে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রধান  শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিতভাবে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

এদিকে পার্শ¦বর্তী যে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি রয়েছে, সেখান থেকে হলেও দ্রুত বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর)