ভুল চিকিৎসা, দেড় মাসে তিন প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৪১

যশোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

যশোরের নওয়াপাড়ায় অবস্থিত ডক্টরস্ ক্লিনিকে গত দেড় মাসে তিনজন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর ডক্টরস্ ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের পর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ থাকার কারণে মাহফুজা খাতুন (২১) নামে একজন প্রসূতি মারা গেছেন। ইতিপূর্বে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিকটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে যশোর জেলা সিভিল সার্জন। 

অভয়নগর উপজেলার পালপাড়া গ্রামের খাদিজা বেগম জানান, তার বোন মাহাফুজা খাতুনকে গত ১৫ আগস্ট ডক্টরস্ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৬ আগস্ট ক্লিনিকের মালিক আব্দুল গাফফার তার অস্ত্রোপচার করেন। মাহাফুজার একটি পুত্র সন্তান হয়। ছয়দিন পর থেকে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাকে আব্দুল গাফফারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরামর্শ অনুয়ায়ী ওইদিন যশোরের কুইন্স হাসপাতালে নিয়ে মাহাফুজার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। তার পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রয়েছে বলে ধরা পড়ে। এরপর আব্দুল গাফফারের কথামতো তাকে ডক্টরস্ ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পুনরায় মাহাফুজার অস্ত্রোপচার করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় মাহফুজা মারা যায়।

অভয়নগর উপজেলার ভাটবিলা গ্রামের সোমনাথ মন্ডল অভিযোগ করেন,‘ডক্টর ক্লিনিকের মালিক আব্দুল গাফফারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রী রসুতি দীপা রাণী মল্লিক (২৫) গত  ৭ আগস্ট মারা গেছে।’

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ভরতপুর গ্রামের তাজামুল দফাদার জানান, তার স্ত্রী আকলিমা খাতুন (২৭) গত ১৭ জুলাই ডক্টরস্ ক্লিনিকে ভর্তি হন। ডক্টরস্ ক্লিনিকের মালিক আব্দুল গাফফার ওইদিন তার অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু তিনি সুস্থ হননি। গত ৯ আগস্ট আকলিমা খাতুনকে যশোর  জনতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১০ আগস্ট সেখানে তার অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করা হয়। গত ২০ আগস্ট রাতে তিনি মারা যান। 

এ ঘটনায় ২১ আগস্ট  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডক্টরস্ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যশোরের সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন। যশোরের সিভিল সার্জন দিলীপ কুমার রায়  ২১ আগস্ট রাতে অভিযান চালিয়ে ক্লিনিকটি সাময়িকভাবে বন্ধ এবং তা সিলগালা করে দেন।

যশোরের সিভিল সার্জন দিলীপ কুমার রায় বলেন, 'পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে প্রসূতি আকলিমা খাতুনকে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। অন্য একটি ক্লিনিকে আরেকটি অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করার পর তার মৃত্যু হয়। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (হাসপাতাল) নিদের্শনা অনুযায়ী ডক্টরস্ ক্লিনিক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। আকলিমা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘মাহাফুজা খাতুনের মৃত্যুর ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)