ফেনীতে সঞ্চয়পত্রে আগ্রহ বাড়ছে

বছরের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক বিক্রি দুই মাসেই

আরিফ আজম, ফেনী প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৮

ফেনীতে ব্যাংক আমানতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে গ্রাহকদের আস্থা বাড়ছে। জেলায় চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়ে গেছে প্রথম দুই মাসে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এ সংস্থায় বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র খাতে।

ব্যাংকের চেয়ে দ্বিগুণ মুনাফা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এবং ঝুঁকিবিহীন সহজে বাড়তি মুনাফা লাভের জন্যে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রমুখী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ফেনী জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অর্জিত বিনিয়োগের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। প্রথম দুই মাসেই (জুলাই-আগস্ট) এর অর্ধেক বিক্রি হয়ে গেছে, যার পরিমাণ ৩৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছর এ সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।

চলতি অর্থবছর শুরুর মাস জুলাইতে বিক্রি হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। এ মাসে মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয় ৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের এ সময়ে ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল।

অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। গত বছরের আগস্টে বিনিয়োগ হয়েছিল ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ফেনী জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রের মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৮ কোটি ৩০ লাখ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৪৫ লাখ, ফিক্সড বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ২ কোটি ৮৮ লাখ, ৩ মাস অন্তর ৩ বছর মেয়াদি ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়। আর আগস্টে বিনিয়োগ হয় পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৯ কোটি ২৮ লাখ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৬৯ লাখ, ফিক্সড বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ২৬ লাখ ও ৩ মাস অন্তর ৩ বছর মেয়াদি ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

অধিদপ্তরের সূত্র যায়, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৫৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ হয়। এর মধ্যে গ্রাহকদের ৯২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আসল ও মুনাফা পরিশোধের পর নিট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৯৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ফেনী জেলা সঞ্চয় অফিস/ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সিরাজুল ইমাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ব্যাংকের চেয়ে দ্বিগুণ মুনাফা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকি নেই। সেবা নিতে এসে গ্রাহকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে সহজে বাড়তি মুনাফা লাভে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্রমুখী হচ্ছেন।’

জানা গেছে, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১১.৫২ শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১.৭৬ শতাংশ, ফিক্সড বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১১.২৮ শতাংশ, ৩ মাস অন্তর ৩ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে ১১.৪ শতাংশ হারে মুনাফা দেয়া হচ্ছে।

গত অর্থবছরের মাসিক বিবরণীতে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৬ কোটি ৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়। নিট বিনিয়োগ ছিল ১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

ফেব্রুয়ারি মাসে ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়। এর মধ্যে ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৭ কোটি টাকা।

মার্চ মাসে ১৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

এপ্রিল মাসে ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

মে মাসে ১২ কোটি ৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

জুন মাসে ১৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ১২ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

২০১৭-১৮ অর্থবছর শুরুর জুলাই মাসে ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট ছিল ৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

আগস্ট মাসে ১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধন করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

সেপ্টেম্বর মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ১২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।

অক্টোবর মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ১০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

নভেম্বর মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা আসল ও ৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

ডিসেম্বর মাসে বিনিয়োগ হয়েছে ৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা আসল ও ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। নিট বিনিয়োগ ছিল ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :