মুশফিক-মিথুনে সম্মান রক্ষা, কিন্তু শেষ রক্ষা হবে?

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৩৬ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২৩:৪৬

দেলোয়ার হোসেন, আবুধাবি থেকে

আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেটে গ্রাউন্ডের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ২০ হাজার। আগের ম্যাচে গ্যালারি ছিল ফাঁকা। তবে এ ম্যাচে মোটামুটি দর্শক হলো, যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যাবার হতাশার পর মুশফিক- মিথুন (৮৪ বলে ৬০) জুটির ব্যাটিং উপভোগ করলেন তারা। এক রানের জন্য মুশির সেঞ্চুরি বঞ্চিত হওয়াটা তাদের আহত করলো। ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ কি প্রবাসীদের মুখে হাসি ফুটাতে পারবে? আবুধাবির উইকেট কিন্তু পুরো ব্যাটিং মনে হচ্ছে।

নাজমুল হাসান শান্তকে বাদ দিয়ে সৌম্য সরকারকে একাদশে নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। শান্ত তো তাও ৬/৭ রান করে করেছিলেন তিন ম্যাচে। সৌম্য সেটাও পারলেন না। ৫ বলে ০ রানে ফিরে গিয়ে আবারও প্রমাণ করলেন আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অবস্থায় নাই তিনি। গত সাত ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে এসেছে ০, ২৮, ৩, ৩, ০, ৮, ০। সৌম্যর অফ ভয়াবহ অফ ফর্ম অন্য দুই ফরম্যাটেও।

গত ১১ টি-টোয়েন্টি ইনিংসে সৌম্য করেন যথাক্রমে ০, ১৪, ২৪, ১, ১০, ১, ৩, ১৫, ০, ১৪, ৫। আর সর্বশেষ সাত টেস্ট ইনিংস তার রান যথাক্রমে ১০, ৮, ১৫, ৩৩, ৯, ৯, ৩।

সাকিবের জায়গায় সুযোগ পাওয়া মুমিনুল হক দারুণ চার মেরেছিলেন শুরুতেই। ভালো করার ঘোষণা ছিল ওই চারে। কিন্তু পরক্ষণেই বোল্ড হয়ে যান তিনি। লিটন এক ইনিংস একদিন ভালো করেন তো, ৫/৭ ইনিংসে রান নেই। গত ম্যাচে ৪২ রান করা লিটন এদিন থামেন ৬ রানে। মহা বিপর্যয়। ১২ রানে তিন উইকেট শেষ। ম্যাচের বারটা বাজিয়ে দিয়ে গেছেন তিন ব্যাটসম্যান।

এখান থেকে দলকে টেনে তুলা শুধু কঠিন নয়, খুবই কঠিন। তবে এমন কঠিন কাজ বহুবার করে দেখিয়েছেন মুশফিক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে এমন পরিস্থিতিতে দলকে টেনে তুলেছিলেন ১৫০ বলে ১৪৪ রান করে।

সঙ্গে পেয়েছিলেন মোহাম্মদ মিথুনকে। মিথুন করেছিলেন লড়াকু ৬৩ রান। মুশফিক-তৃতীয় উইকেট জুটিতে এসেছিল রেকর্ড ১৩১। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই চতুর্থ উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের জুটি।

চরম বিপদে দলকে আবারও উদ্ধার করলেন এই জুটি। আজ চতুর্থ জুটিতে ১৪৪ রান যোগ করেন মুশফিক ও মিথুন। ৮৪ বলে ৬০ রান করার পর আউট হন মিথুন।

তবে মুশফিক তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মুশি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন ৭ নম্বরে ওয়ানডে সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু এক ৯৯ রান করার (মুশফিকই একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান যিনি ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না) পর শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ফিরতে হয় তাকে। ১ রানের আফসোস তো বটেই, দলও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। মুশফিক উইকেট থাকলে স্কোরের চেহারা অন্যরকম হতে পারত।

গত ম্যাচে দারুণ খেলা ইমরুলকে এদিনও সাবলীল মনে হচ্ছিল। কিন্তু ১০ বলে ৯ করার তাকে ফিরতে হয় এলবি হয়ে। এরপর মিরাজ আউট হন ১২ বলে ১১ রান করে। দায়িত্ব নিয়ে খেলছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিস্তু তাকে বিদায় নিতে হয় ২৫ বলে ২১ রান করার পর। ১২ বলে ১৪ রান করে মাশরাফি আউট হয়ে গেলে ৭ বল বাকি থাকতেই ২৩৯ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। যে সাতটা বল রয়ে গেল, তাতে ১০টা রান হতে পারত। এই ১০ রান কম কি ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিবে?পাকিস্তানের জুনায়েদ খান মাত্র ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৩৯ (৪৮.৫ ওভার)

(লিটন দাস ৬, সৌম্য সরকার ০, মুমিনুল হক ৫, মুশফিকুর রহিম ৯৯, মোহাম্মদ মিথুন ৬০, ইমরুল কায়েস ৯, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ১২, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৩, রুবেল হোসেন ১, মোস্তাফিজুর রহমান ০*‍; জুনায়েদ খান ৪/১৯, শাহীন শাহ আফ্রিদি ২/৪৭, হাসান আলী ২/৬০, মোহাম্মদ নওয়াজ ০/৩৯, শোয়েব মালিক ০/১৪, শাদব খান ১/৫২)।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/ডিএইচ)