ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন স্থগিত
সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলোচনায় বসতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে শনিবারের মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করেছে সম্পাদক পরিষদ। তারা আশা করছে, সরকার সংবাদমাধ্যমের অংশীজনের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা আমলে নিয়ে দ্রুত আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেবে।
আজ বৃহস্পতিবার সম্পাদক পরিষদের পক্ষে এর সাধারণ সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের আশঙ্কা, এর মাধ্যমে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ হবে। এই আইনের অপব্যবহারে কারণে ঝুঁকিতে পড়বেন সাংবাদিকরা।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ১০ম জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের সব অংশীজন মনে করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক আঘাত। আইনটি পাসের আগে আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা সরকারকে জানিয়েছি। এমনকি সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদ আইনের কয়েকটি ধারা সম্পর্কে তাদের সুনির্দিষ্ট আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের সাংসদেরাও আইনটি এভাবে পাস না করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সব বিরোধিতা ও আপত্তি উপেক্ষা করে সরকার কণ্ঠভোটে যেভাবে আইনটি পাস করে তা সংবাদমাধ্যমের জন্য দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে। এ অবস্থায় আমাদের রাজপথে প্রতিবাদ জানানো ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।’
প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সম্পাদক পরিষদ শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি নিয়েছিল। কেবল সম্পাদক পরিষদই নয়, অনুরূপ কর্মসূচি নিয়েছে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
এই প্রেক্ষাপটে তথ্যমন্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ আমলে নিয়ে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, তার (তথ্যমন্ত্রী) অনুরোধে ২৯ সেপ্টেম্বর আহূত সম্পাদক পরিষদের কর্মসূচি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সম্পাদক পরিষদের পক্ষে মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আমরা বরাবরই আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। এর আগেও মাননীয় মন্ত্রী যখন কোনো বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে আমরা অংশ নিয়েছি; যদিও সেসব আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলা যাবে না।’
তবে এবার আলোচনার মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধকারী ধারাগুলো অপসারণ করা হবে বলে আশা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কিন্তু সেটি যদি না হয় আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। আশা করি সরকার সংবাদমাধ্যমের অংশীজনের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা আমলে নিয়ে দ্রুত আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৭সেপ্টেম্বর/মোআ)