রাজবাড়ীতে চিকিৎসকের ‘অবহেলায়’ শিশুর মৃত্যু

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৫৯

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলার কারণে আলিম শেখ নামে সাত বছরের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আলিম শেখ আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর এলাকার মামুন শেখের ছেলে ও আলাদিপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

শনিবার সকালে সরেজমিনে সদর হাসপাতালে দেখা গেছে, সেখানে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আলী আহসান তুহিনকে ঘিরে রেখেছে। তারা চাচ্ছেন স্বজন হারানোর বিচার। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার সকালে বিদ্যালয়ের দোলনায় খেলা করতে গিয়ে দোলনা উল্টে বুকে আঘাত পাওয়ার পর রাজবাড়ী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও আলিমের স্বজনরা। হাসপাতালে এনে ভর্তি করার পর দেড় ঘণ্টা ডাকাডাকি করেও কোন চিকিৎসকের দেখা পাননি তারা। অবশেষে মারা যায় আলিম।

আলাদিপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনয় কুমার বিশ্বাস জানান, আলীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হাসান বিদ্যালয়ের শিশুদের খেলাধুলা করার জন্য দোলনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় ছুটির পরও দোলনা বিদ্যালয়ে আনা হয়নি। শনিবার বিদ্যালয়ে এসে তা দেখতে পাই। একটু পরে কান্নাকাটির শব্দে এগিয়ে দেখি- শিশু আলিম আহত হয়েছে। পরে তাকে সদর হাসপাতালে পাঠাই।

নিহত শিশু আলিমের মামা ইয়ারউদ্দিন শেখ জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর দেড় ঘণ্টা পার হলেও ফেসবুক আর গল্পে ব্যস্ত থাকায় কোন চিকিৎসক সেবা দেননি আহত শিশুটিকে। যে কারণে মারা গেছে শিশু আলিম শেখ।

আরেক মামা আব্দুস সাত্তার জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিজা হাসপাতালে বসেই ফেসবুক দেখছিলেন, অপর একটি ফোনে খোশগল্প করছিলেন। বারবার ডাকার পরও তারা রোগীর কাছে যাননি।

রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য নাজমুল হাসান মিন্টু জানান, সরকারি হাসপাতাল বাদ দিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন রাজবাড়ী সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা। যে কারণে রোগীর প্রতি কোন দায়িত্ব নেই তাদের। হাসপাতালে যে চিকিৎসক দায়িত্বরত ছিলেন তার বিচারের দাবি জানাই।

হাসপাতালে ভর্তি অন্য এক রোগীর স্বজন হারুন অর রশিদ জানান, সকালে আমার চাচা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। ভর্তি করার পর দুপুর একটা পর্যন্ত কোন চিকিৎসকের দেখা পাইনি।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আলী আহসান তুহিন জানান, শনিবার সরকারি দুটি দিবস ছিল- যে কারণে আমি ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম। রোগী মৃত্যুর খবর শোনার পরই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন দ্রুত দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক যদি দোষী হয়, তবে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া এই হাসপাতালে ইমাজেন্সি ভেন্টিলেশনের কোন ব্যবস্থা নেই। জরুরি কোন ব্যবস্থা না থাকায় রোগীরা মারা যায়।

অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মনিজার সাথে যোগাযোগ করতে সদর হাসপাতালে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :