সস্তায় আগাম শ্রম বিক্রি আদিবাসী নারীদের

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২১

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিকদের হাতে ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত তেমন কাজ থাকে না। এই সময়টায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে আদিবাসীরা। অভাব-অনটনে তাদের অনেকেই কৃষকের কাছে কম দামে আগাম শ্রম বিক্রি করে দিচ্ছে। মহাজনের কাছ থেকেও চড়া সুদে ঋণ গ্রহণসহ ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়ছে অনেকেই। আর যারা আগাম শ্রম বিক্রি বা ঋণ গ্রহণ করতে পারছে না তারা সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করে চলেছে।

কৃষি শ্রমিক প্যনতি উরাঁও, শোভা উরাঁও, অনিমা উরাঁও, চারু উরাঁও, ঘিয়া উরাঁও, কমলা উরাঁও, কল্পনা উরাঁও, বাসন্তী উরাঁও বলেন, আমরা সবাই ভূমিহীন। বাড়িতে সামান্য খাবারের মজুদও নেই। দিন আনি দিন খাই অবস্থা। শ্রাবণ মাসে ক্ষেত লাগানোর পরে তাদের হাতে আর তেমন কোনো কাজ থাকে না। রোপা আমন ধান পাকতে বাকি তিন মাসের মতো। তাদের বাড়ির পুরুষ সদস্যদের অনেকেই কর্মের সন্ধানে এলাকার বাইরে চলে গেছেন। বাধ্য হয়ে তারা আগামী অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটা ও কৃষকের বাড়িতে কৃষিশ্রমিকের কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। এজন্য তারা দিন হাজিরা ২০০-২৫০ টাকায় আগাম শ্রম বিক্রি করছে। অথচ ভরা মৌসুমে তাদের মজুরি থাকে ৪০০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত।

তারা আরও বলেন, তাদের অনেকেই বাঁশ, বিন্নার ফুল, তালপাতা আর খেজুর পাতা দিয়ে পাটি, ঝাটা, সাপটা, কুলা, ডালি, টোপা, চালুন খালই ও মাছের ওড়া তৈরি করে তা হাটে-বাজারে বিক্রি করে সংসার চালানোর চেষ্টা করে চলেছেন। কেউবা খাল, বিল, ডোবা, নালায় মাছ ও কাকড়া ধরে আর শালুক, শামুক, ঝিনুক কুড়িয়ে খাবারের সংগ্রহ করছেন।

তাড়াশ উপজেলা উরাঁও ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিরেন্দ্র নাথ বাঁরো বলেন, তাড়াশে ২০ হাজারের মতো আদিবাসী মানুষের বসবাস। এদের প্রায় সবাই ভূমিহীন। তবে বংশ পরম পরায় আদিবাসী নারীরা কুটির শিল্পের নানা রকম জিনিস তৈরি করতে পারদর্শী। মূলধন হিসেবে সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হলে বছরের এই সময়টাতে তাদের সমস্যায় পড়তে হতো না।

(ঢাকাটাইমস/০১অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :