বগুড়ায় পুলিশি তল্লাশির নামে ভাঙচুরের অভিযোগ

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:৪৭

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

আসামি ধরতে গভীর রাতে তল্লাশির নামে বাড়ি-ঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কয়েকটি পরিবার বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ভাঙচুর ও লুটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, নিজেরাই ভাঙচুর করে পুলিশের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

মঙ্গলবার (০৯ অক্টোবর) বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামে সরেজমিনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

সোমবার (৮ অক্টোবর) বিকালে মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই মোবারক ও পলাশ খামারপাড়া গ্রামে যান। তারা চেক জালিয়াতির একাধিক মামলার আসামি আওয়ামী লীগ কর্মী লিয়াকত আলী মঞ্জুকে আটক করেন। এসময় তার আত্মীয়-স্বজন পুলিশকে মারপিট করে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে দুই পুলিশকে আটকে রাখে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে দুই পুলিশকে উদ্ধার করে এবং নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয়রা জানায়, আসামি ছিনতাইয়ের সাথে জড়িতরা ঘটনার পরপরই বাড়িঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে গ্রামে দুই গাড়ি পুলিশ ঢোকে। এরপর পুলিশ আসামি লিয়াকত আলী মঞ্জু, তার আত্মীয় কহিনুর ইসলাম, আবু জাফর, আব্দুল মান্নান, আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগ নেতা নাজির হোসেন এবং মতিয়ার রহমানের বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি বাড়ির আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করে চলে যায়।

মোকামতলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজির হোসেন বলেন, গ্রামের নারীদের সঙ্গে পুলিশ খারাপ আচরণ করলে তারাই আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনার জের ধরে পুলিশ রাতে তাণ্ডব চালায়। তিনি বলেন, আমার বাড়ির কোনো আসবাবপত্র ঠিক রাখেনি পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িতরা কেউ বাড়িতে নেই জেনেও পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেছে।

ইউনিয়ন পরিষদ সচিব কহিনুর ইসলাম বলেন, সোমবার আমি সারাদিন অফিসে ছিলাম। সেখান থেকেই খবর পাই বাড়ির পাশে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সবাই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আমার স্ত্রীও বাড়িতে তালা দিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। একারণে আমিও রাতে বাড়িতে যাইনি। অথচ পুলিশ আমার বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। তিনি দাবি করেন, পুলিশ তার আলমারি ভেঙে নগদ এক লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। জমি বন্ধক রাখা বাবদ এক লাখ এবং বেতনের ৩২ হাজার টাকা তিনি বাড়িতে রেখেছিলেন বলে তার দাবি।

মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় রাতেই ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত দেড় শতাধিক নারী-পুরুষকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাতে ওই গ্রামে কোনো পুলিশ যায়নি দাবি করে তিনি বলেন, আসামিরা নিজেরাই বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে পুলিশের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/০৯অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)