ঘূর্ণিঝড় তিতলি: ১৯ জেলায় ছুটি বাতিল

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:২২ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ভারতীয় উপকূলে আঘাত হানার পর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ দুর্বল হলেও সতর্কতা হিসেবে দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ১৯ জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পিআইডি-তে ঘূর্ণিঝড় তিতলি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি ।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, তিন থেকে চার দিন আগেই সরকার তিতলির পূর্বাভাস পেয়েছে। সেই থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ জেলাসমূহকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

ঘূর্ণিঝড় তিতলির সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মায়া বলেন, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত হ্যারিকেনের তীব্রতা সম্পন্ন এ ঘূর্ণিঝড় উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ ভোররাতে গোপালপুরের নিকট দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। তবে এর গতি প্রকৃতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসলে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

মন্ত্রণালয় থেকে ঘূর্ণিঝড় তিতলি মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর নির্দেশনা মোতাবেক ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপকূলীয় ১৯টি জেলার প্রত্যেকটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা-উপজেলাসমূহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে।

মায়া বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ মজুদ রাখা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটি উপজেলায় এবং জেলায় সর্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রেল রুম এনডিআরসিসি এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ১৯ জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

ত্রাণমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণকে স্বল্প সময়ের নোটিশে উপযুক্ত নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উপকূলীয় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিপিপি স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। সিপিপি ঢাকা প্রধান কার্যালয়েও কন্ট্রোলরুম সার্বক্ষণিকভাবে খোলা রাখা হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে স্থাপিত ওয়্যারলেস স্টেশনের সঙ্গে নিয়মিত বেতার যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার-ভিডিপির সকল সদস্যকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ খান, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এজাজুল বার, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ, সিপিপির পরিচালক আহমাদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১১অক্টোবর/এমএম/এমআর)