নিজে নিজে রূপচর্চায় যা জানতে হবে

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৫৯ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১০

আবুল কাশেম

বুঝতে শেখার পর থেকেই শরীরের ত্বক চর্চার বিষয়ে সচেতন হন অনেকে। ত্বক ও রূপচর্চার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও ছেলেদের সংখ্যাও কম নয়। রূপচর্চার জন্য বেশিরভাগ লোকই বিউটি প্রসাধনীর পরিবর্তে ব্যবহার করেন ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপাদান। যেমন ডিম, ছোলার বেসন, ঘি, লেবুর রস ইত্যাদি।

চুলে ডিম লাগানো, মুখে বেসনের প্রলেপসহ ঘরোয়া অনেক উপাদান দিয়েই রূপচর্চা করা হয়ে থাকে। আর এসব খাওয়ার সামগ্রী কেনা প্রসাধনীর চেয়ে অনেক সময় ভালো কাজ করে বলে বিশ্বাস করেন অনেকে। তবে আসলেই কি রূপচর্চার ক্ষেত্রে ঘরোয়া এসব জিনিসে ভালো কাজ করে? নাকি উল্টো ক্ষতি করে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। এই সময় পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

ঘি আর বেসন

ত্বকের আর্দ্রতায় ঘি, ত্বক মসৃণ করতে বেসনের ব্যবহার সম্পর্কে হয়তো শুনেছেন। বেসন পানি দিয়ে মাখিয়ে থকথকে করে নিতে হবে। তারপর সেগুলো ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু প্রসাধন বিজ্ঞানী ফ্লোরেন্স আদেপজু বলেন, ‘ঘি খুব আঠালো বস্তু। এতে যে উচ্চমাত্রায় চর্বি রয়েছে যা ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। আমি বিউটি টিপ হিসেবে এটিকে না বলব। আর ছোলা দিয়ে বানানো বেসন হয়তো ত্বক মসৃণ করতে কিছুটা আসতে পারে। কিন্তু দেখুন এগুলো তো ত্বকে লাগানোর জন্য বানানো হয় না। তাই রূপচর্চায় এর ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে।’

নরম চুল পেতে ডিম

খসখসে চুল অনেকেরই খুব অপছন্দ। শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার দিলে চুল নরম হয় বলে বিউটিশিয়ানরা বলে থাকেন। নারীর দিঘল কালো চুল নিয়ে এই উপমহাদেশে নানা গল্প রয়েছে। চুলে ডিম ম্যাসাজ করে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধোয়ার পর নাকি চুল নরম হয়। কাঁচা ডিমের গন্ধ একদম সুখকর না হলেও মেয়েদের এটি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

তবে এ ধারনার সঙ্গে একমত নন হেয়ার আর্টিস্ট টলু আগোরো। তিনি বলেন, ‘আমাদের চুলের ভেতরটাতে রয়েছে প্রোটিন। আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে প্রোটিন থাকলে সেটি চুলের গোড়াকে শক্ত করে। এতে চুল ভাঙা বা আগা ফাটা কমে। তবে ডিমে যে প্রোটিনের অণু রয়েছে তা চুলের কাণ্ডের জন্য অনেক বড়। ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামতে তা কাজ করে এই ধারণার সঙ্গে আমি একমত নই।’

লেবুর রসে লোম ব্লিচ

শরীরের লোম অনেকের অপছন্দ। অনেকেই হাত-পা ও মুখম-লের ত্বকের অতিরিক্ত লোম তুলে ফেলেন। অনেকে পাতলা লোম ব্লিচ বা সাদা করেন। লেবুর রসের এই ক্ষমতা আছে বলে মনে করা হয়। লেবুর রসে মধু মিশিয়ে লোমের ওপর লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে রোদে বসে থাকলে লোমের রং হালকা হয় বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।

স্টাইলিস্ট ম্যাগাজিনের বিউটি এডিটর লুসি পার্টিংটন এটি কাজে আসে কি না তা সরাসরি না বললেও তিনি এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ত্বকে মধু-মিশ্রিত লেবুর রস লাগিয়ে রোদে বসে থাকলে সূর্যের আলোতে ত্বক কতটা পুড়ে যাবে চিন্তা করুন তো একবার। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শরীরের লোমকে সহজভাবে নিন। লোকে কি ভাবল তাতে কি আসে যায়?’

চুল চকচকে করতে ভিনেগার

কুচকুচে কালো লম্বা চুল রীতিমতো আভা ছড়াচ্ছে। এ অঞ্চলে সুন্দর মেয়েদের যখন বর্ণনা দেওয়া হয় তখন এমন চকচকে চুল তাদের থাকতেই হবে। এক বাটি হালকা গরম পানিতে ভিনেগার গুলিয়ে তা দিয়ে সপ্তাহে অন্তত একবার চুল ধুলে নাকি আভা ছড়ানো চুল পাওয়া যায়। এ বিষয়ে হেয়ারড্রেসার ড্যানিয়েল ফারলে ম্যাকসুইনি জানান, ‘ভিনেগারের পরিষ্কার করার ক্ষমতা আসলেই আছে। এতে যে অ্যাসিড রয়েছে তা যা চুলে জমা যেকোনো ময়লা পরিষ্কার করে। তাতে চুল চকচক করবে সেটাই স্বাভাবিক। অ্যাসিড হয়তো চুল মসৃণও করে। তবে যাদের চুল শুষ্কও তাদের এটি ব্যবহার করা উচিত নয়।’

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/একে/এমআর)