প্রধানমন্ত্রীকে মাদার তেরেসা বলতে হবে কি না, প্রশ্ন রিজভীর

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৫৮ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৫:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশ সন্ত্রাসে ছেয়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এখন মানুষ মন খুলে কথা বলতে, এমনকি হাসতেও ভয় পায়। এই পরিস্থিতিতের প্রধানমন্ত্রীকে মানবতার প্রতীক বলতে হবে কি না, জানতে চেয়েছেন তিনি।

সোমবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

আগের দিন মাদারীপুরে জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ায় কামাল হোসেনের তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, খুনি ও দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ঐক্য গড়েছেন তিনি। 

শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পড়ন্ত বেলায় প্রধানমন্ত্রীর খাপছাড়া বক্তৃতা তাদের দৈন্যদশার বহির্প্রকাশ। এর ফলে রাজনীতির ময়দান শান্ত, নিরাপদ ও সুখময় হয়ে উঠবে না।’

‘গতকাল মাওয়া ও শিবচরের জনসভায় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী আজগুবি, উদ্ভট, স্ববিরোধী নানা কথা বলেছেন-যা জাতিকে হতবাকই করেনি, মানুষ মুচকি হেসেছেও। আসলে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তাঁর বক্তব্যে নিজ দলের অনাচারগুলো অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে বক্তব্য রেখেছেন।’

‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই’- এমন কথা বলে রিজভী বলেন, ‘২০০৬ সালের অক্টেবরে আপনি যখন লগি বৈঠা নিয়ে আপনার কর্মীদের ঢাকায় আসতে বলার নির্দেশ দিয়ে দলীয় লোকদেরকে দিয়ে ২৮ অক্টোবরে লাশের ওপর নৃত্য করালেন, তারপরেও কী আপনাকে শান্তির দূত বলতে হবে?’
‘চট্টগ্রামে হত্যার হুমকির কথা বাদই দিলাম, এবারে ক্ষমতায় এসে বিএনপির মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে যুবনেতা-ছাত্রনেতাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের গুম হওয়া-যা প্রত্যক্ষভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন দ্বারা সংঘটিত হয়েছে, তারপরেও কি আপনাকে মানবতার জননী বলতে হবে?’
‘বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যার হিড়িকে দেশব্যাপী আতঙ্ক ও ভয়ের গ্রাসের মধ্যেও আপনাকে কি বলতে হবে আপনি আইনের শাসনের সরকারের প্রধান?’

‘আপনার শাসনামলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে, দেবালয়ের পুরোহিতকে হত্যা করা হয়েছে, বিদেশিরা হত্যার শিকার হয়েছে। আপনার দলের এমপি কচি বাচ্চা ছেলের পায়ে গুলি করেছে, নারায়ণগঞ্জের নিস্পাপ কিশোর ত্বকী হত্যারও অভিযোগ সেখানকার আপনারই একজন এমপির বিরুদ্ধে, তারপরেও আপনাকে কি মাদার অব তেরেসা বলতে হবে?’
‘প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় একের পর এক সাজা দিয়ে আপনার ক্রোধাগ্নী নির্বাপণ করতে পারেননি, এর উপর মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে পাথরচাপা দিয়ে সারাজাতির দম বন্ধ করতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালাকানুন করে-আপনারা গণতন্ত্রকেই লকআপ  করেছেন। এখন মানুষ মন খুলে কথা বলতে এবং হাসতেও ভয় পায়। মানুষ এখন ডিজিটাল আতঙ্কে ভুগছে।’

‘আপনার নির্বাচনে ভোটারদের কোন অস্তিত্ব নেই, আপনার অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে তা ভোট ডাকাতি’।

গণমাধ্যমগুলোর মালিক ও সাংবাদিকরা চরম আতঙ্কে আছেন। এরপরেও কী আপনাকে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলতে হবে?- প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন বিএনপির মুখপাত্র।

(ঢাকাটাইমস/১৫অক্টোবর/বিইউ/ডব্লিউবি)