শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ক্যামেরা হাতে প্রতিবাদ

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৪০

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম (ফাইল ছবি)

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ক্যামেরা হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আলোকচিত্রীরা ৷ মঙ্গলবার বিকাল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়৷

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলাকালে একটি আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারের কারণে গত ৫ আগস্ট শহিদুল আলম গ্রেপ্তার হন ৷ পরে তার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয় ৷

আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, ইউসুফ তুষার, মুঈনউদ্দীন আহমেদ, পাঠশালার প্রধান তানভীর মুরাদ তপু, আমিনুজ্জামান, সুদীপ্ত সালামসহ ৫০ জনেরও বেশি আলোকচিত্রী প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন ৷

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ৷ সমাবেশের শুরুতে ক্যামেরা উঁচু করে ধরে প্রতিবাদ জানান আলোকচিত্রীরা ৷

আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন বলেন, 'আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমাদের সমবেত হওয়া ৷ শহিদুল আলম বাংলাদেশের আলোকচিত্রশিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ৷ তার প্রতিষ্ঠিত দৃক ও পাঠশালা দেশের আলোকচিত্র শিল্পে নবজাগরণ এনেছে ৷ তিনি এই শিল্পের একজন কারিগর ৷’

মুনীরা মোর্শেদ মুন্নী বলেন, '৭০ দিন হয়ে গেল শহিদুল আলম কারাগারে ৷ আজকের নারী আলোকচিত্রীদের বেশিরভাগই শহিদুল আলমের হাতে গড়া ৷ প্রত্যেকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে ৷ তাই আমরা শহিদুল আলমের নিঃশর্ত মুক্তি চাই ৷'

তানজিম ওয়াহাব বলেন, 'শহিদুল আলম আমাদের শিখিয়েছেন, আলোকচিত্রের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে ৷ তার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের আলোকচিত্রের সংস্কৃতি বদলে দিয়েছে ৷ অনেক মানুষকে তিনি সহযোগিতা করেছেন ৷ আমাদের উপস্থিতিই তার অবদান জানান দিচ্ছে ৷ কিন্তু আজকে তার অবদান নিয়ে কথা না বলে আমাদের তার মুক্তি চাইতে হচ্ছে ৷’ ‘আলোকচিত্রীদের স্বার্থ নিয়ে তিনি প্রতিনিয়ত কথা বলে গেছেন ৷ তিনি কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটা শক্তি ৷ অতি দ্রুত তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই ৷'

ইউসুফ তুষার বলেন, 'আমাদের শিক্ষক শহিদুল আলম ‘সত্য কথা’ বলার কারণে আজকে কারারুদ্ধ ৷ আমরা এখন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি, তিনি সব সময় এসব জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলতেন ৷ আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই ৷ সত্য বলার জন্য আরো যারা কারাগারে গিয়েছেন, সবার মুক্তি চাই ৷'

তানভীর মুরাদ তপু বলেন, 'আমি মনে করি, শহিদুল আলমের জেলে থাকাটা জেলে থাকা নয় ৷ কারণ, তার কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা যায়নি ৷ নানা মাধ্যমে আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকা উচিত ৷ শহিদুল আলমই আমাদের শিখিয়েছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিবাদ করতে হয় ৷'

সমাবেশের সঞ্চালক তাসলিমা আক্তার লিমা বলেন, 'মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার ৷ ৫৭ ধারার মতো নির্যাতনমূলক আইনে শহিদুল আলমকে আটকে রাখা হয়েছে ৷ এখন কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই নানাভাবে ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা চলে ৷ শহিদুল আলম জামিনের আবেদন করেছিলেন ৷ সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও তাকে জামিন দেওয়া হয়নি ৷ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সম্প্রচার আইন দিয়ে সরকার সত্য বলার সুযোগ খর্ব করছে ৷'

ক্যামেরা উঁচিয়ে ধরে প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন আলোকচিত্রীরা ৷

(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/প্রতিনিধি/এআর)