খাশোগি হত্যার প্রমাণ চাইলেন ট্রাম্প

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:০৭

আবুল কাশেম, ঢাকাটাইমস

ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভিতরে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে- এর পক্ষে তুরস্ক যে রেকর্ডটি প্রমাণ হিসেবে দাবি করছে সেটি দেয়ার জন্য তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর বিবিসির।

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, 'যদি সেগুলো থেকে থাকে তাহলে সেগুলো চেয়ে পাঠিয়েছি'। তুরস্কের হাতে থাকা রেকর্ডের অস্তিত্ব নিয়েও ট্রাম্পের কথায় অনিশ্চয়তা পরিলক্ষিত হয়। তিনি বলেন, 'এটার অস্তিত্ব আছে কি না আমি নিশ্চিত নই, সম্ভবত আছে, খুব সম্ভবত আছে।'

খাসোগি ইস্যুতে সদ্য সৌদি ও তুরস্ক সফর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এছাড়া সপ্তাহের শেষের দিকে এই ঘটনার প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

ঘটনার শুরুতে সৌদির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে এই ঘটনা সত্যি হলে তাদেরকে মাস্তি পেতে হবে। তবে কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই ট্রাম্পের সেই প্রতিক্রিয়া পাল্টে যায়। তিনি এবার শান্তস্বরে বলেন, 'এই ঘটনা ঘটেছে কি না তা আগে প্রমাণিত হতে হবে। তারপর দোষী হলে সৌদিকে দোষ দেয়া যাবে'। এমন কথা বলার কয়েকঘন্টা পর আবারো স্বর পাল্টে ট্রাম্প বলেন, দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়ে থাকতে পারেন খাশোগি।

ট্রাম্পের এই ধারাবাহিক স্বর পরিবর্তনের পর তিনি সৌদি ও দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বাঁচানোর জন্য এমন কথা বলছেন বলে বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সৌদি আরবকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন কি না? এদিন সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, 'না, মোটেই না, কী হচ্ছে আমি শুধু তা বের করতে চাই।'

গত দুই অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে প্রয়োজনীয় কাগজ আনতে গিয়ে নিঁখোজ হন সৌদির নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি। এরপর্ তাকে দূতাবাসের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তুরস্ক। সৌদি আরব শুরুতে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও এখন তারা স্বর নরম করেছে।

সিএনএন জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের দায় তৃতীয় পক্ষের ওপর চাপাতে 'বলির পাঠা' খোঁজা হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, দুর্ঘটনাবশত এবং একজন গোয়েন্দাকর্মকর্তার খামখেয়ালিপনার কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন  খাশোগি- এমন অজুহাত দাঁড় করাতে পারে সৌদি। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বিবৃতি দেয়নি সৌদ আরব।

ঘটনার পর সেই হত্যাকাণ্ডের অডিও রেকর্ড পাওয়ার দাবি করে তুরস্ক। সেই অডিও রেকর্ডের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, দূতাবাসের প্রবেশের সাত মিনিটের মধ্যেই খাশোগিকে প্রথমে অচেতন করে পরে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয়। এই কাজে ১৫ জনের দলের নেতৃত্বে ছিলেন সৌদির সাধারণ নিরাপত্তা বিভাগের ফরেনসিক প্রমাণের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সালাহ মোহাম্মদ আল তুবাইগি।

এখন পর্যন্ত বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও খাশোগি প্রকাশ্যে না আসায় তার হত্যার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত এ বিষয়টি কিভাবে সামাল দেয় সৌদি এবং যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে ত্রাতা হয়ে সৌদিকে রক্ষা করে সেই বিষয়টি দেখার অপেক্ষায় পুরো বিশ্ব।

ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/একে