কেঁচোসার উৎপাদনে ভাগ্যবদল

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৩৬

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন নিজেই কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন করেন। তা নিজেদের চাষাবাদে ব্যবহার করেন। আবার প্রতি মাসে অন্তত ২৫ হাজার টাকার সার বিক্রি করেন। এতে বছরে আয় হয় অন্তত দুই লাখ টাকা। এখন পুরোদস্তর স্বাবলম্বী আবুল হোসেন। কেঁচো সার উৎপাদন শুরুর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাদের।

সংসারের হাল তো ধরেছেনই, বিদায় জানিয়েছেন অভাব-অনটনের দিনগুলোকেও। আবুল হোসেনের জীবনে এই অভাবনীয় সাফল্য এনেছে কেঁচো। তার বাড়ি উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের ইউনিয়নের বাশিয়া গ্রামে।

গত বৃহস্পতিবার তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির উঠানে কম্পোস্ট সার তৈরি করছেন। তার পাশে একচালা ঘরে সিমেন্টের তৈরি ২০০টি চারি।

আবুল হোসেন বলেন, চারির মাধ্যমে তিনি দেড় বছর ধরে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। গোবর, চা পাতা, কচুরিপানা লতা-পাতা ও ডিমের খোসা, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ও কলাগাছ টুকরা টুকরা করে কেটে মেশানো হয়। বিশ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে দিয়ে কেচু সার তৈরি করেন। সেগুলো চারিতে ভাগ করে রাখা হয়। প্রতিটিতে ছেড়ে দেয়া হয় অন্তত এক হাজার কেঁচো। চটের বস্তা দিয়ে চারি ঢেকে রাখা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কেঁচো সার উৎপাদন হতে দুই মাস সময় লাগে। প্রতি মাসে গড়ে তিনি ২০ থেকে ২২ মণ কেঁচো সার উৎপাদন করতে পারেন। ১৪-১৫ টাকা কেজি দরে এ সার বিক্রি হয়। খরচ বাদ দিয়ে মাসে সাত-আট হাজার টাকা লাভ থাকে। পাশাপাশি চারিতে কেঁচোর বংশ বিস্তার ঘটে। প্রতিটি কেঁচো এক টাকা দরে বিক্রি করেও বাড়তি আয় হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এই সার ব্যবহার করে তিনি ২ একর ১০ শতাংশ জমিতে সারা বছর সবজি ও ধান চাষ করছেন। প্রথমে ২০টি মাটির চারি দিয়ে কেচু সার তৈরি শুরু করেন। বর্তমানে কেচু সারের খামারে দুই শতাধিক চারি আছে। আগে অনেক কষ্ট করে সংসার চলত। এই কেঁচো সার উৎপাদনই তাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে।

গফরগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার পাল বলেন, কেঁচো প্রতি তিন মাসে একবার বংশ বৃদ্ধি করে। একেকবার প্রতিটি কেঁচো ১০০ থেকে ১৫০টি কেঁচো জন্ম দেয়। প্রতিটি বাচ্চা কেঁচোর বাজারমূল্য এক টাকা ৭৫ থেকে ৮০ পয়সা। ফলে মাত্র চার হাজার কেঁচো চাষ করে প্রতি তিন মাসে ৬০ হাজার টাকার বাচ্চা ও ৩০ হাজার টাকার সার বিক্রি করা সম্ভব। আবুল হোসেনকে দেখে এখন উপজেলার অকেকেই কেঁচো চাষ করছেন। স্বাবলম্বী হওয়ার লড়াইয়ে সাফল্য পেয়েছেন তারাও।

(ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)