এরশাদের ‘বার্তা’, নির্বাচন অনিশ্চিত

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:০৯ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন সংসদে প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। নির্বাচন হবে কি হবে না আমরা জানি না। একটি দল সাত দফা দিয়েছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, তা মানা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আগামী দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা রয়েছে।’

শনিবার সকাল ১০টায় মহাসমাবেশে শুরু হয়। সকাল থেকে দলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সমাবেশে যোগদিতে থাকেন। এক পর্যায়ে উদ্যান ছেড়ে বাহিরে শাহবাগ থেকে মৎসভবনের মোড় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।

এই সমাবেশ থেকে এরশাদ গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। আর সে বার্তা ভাইরাল হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার।

অনিশ্চয়তার কথা বলেও ভোটের জন্য প্রস্তুত থাকার কথাও জানান এরশাদ। বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচন করেছি। আজও আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। অবাধ নির্বাচন চাই, নিশ্চয়তা চাই। আমরা যারা সংসদে আছি সকলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীর সরকার গঠন করতে হবে। একটি আবাধ সুষ্ঠু নিররপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে ‘

সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নিরপেক্ষ করতে হবে। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, এই নির্বাচনে আমরা জোটগত এবং একক দুইভাবেই প্রস্তুত আছি।’

‘আমরা তিনশ আসনে প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছি, সেইসঙ্গে আমরা জোটগতভাবে নির্বাচন করতে চাই। সেভাবে মানসিকভাবে প্রস্তুতি আছে, তবে পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে। এ জন্য তিনশ আসনেই নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’

জনগণ জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় বলেও দাবি করেন এরশাদ। বলেণ, জাতীয় পার্টির সামনে সুদিন। আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হতে পারে। পরিস্থিতির আলোকে জাতীয় পার্টি নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’

আজকের সমাবেশ থেকেই ‘নির্বাচনের যাত্রা শুরু হোক’ জানিয়ে সাবেক সেনা শাসক বলেন, ‘নির্বাচনের যারা করতে চাও, এগিয়ে আসো। এ মাসের মধ্যেই পার্লামেন্টারি বোর্ড গঠন করা হবে। তৃণমূলের সমর্থনে মনোনয়ন দেওয়া হবে।’

‘সাধারণ জনগণের উন্নয়নের জন্য যা যা করা লাগে জাতীয় পার্টি তা করবে। শেষ কথা, নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমি নতুন করে ১৮ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমরা নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে চাই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চাই। শিক্ষা পদ্ধতি সংস্কার চাই। স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ চাই। শান্তির রাজনীতি চাই। সড়ক নিরাপত্তা চাই।’

জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়ন, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য দূরীকরণ করবে বলেও অঙ্গীকার করেন। বলেন, ‘ছাত্ররা আন্দোলনের সময় (নিরাপদ সড়কের দাবিতে) বলেছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের মেরামত প্রয়োজন। আমরাও তাই চাই।’

সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন দলেন সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ দলের সিনিয়র নেতারা।

ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/জিএম/ডব্লিউবি