ঐক্যফ্রন্টের প্রথম কর্মসূচিতে সিলেটে চাপা উত্তেজনা

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২১

এম গোলাম মোস্তফা, সিলেট থেকে
গত ১৩ অক্টোবর প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণা দেন ড. কামাল

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠন করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম কর্মসূচিকে ঘিরে সিলেটে চলছে নানা প্রস্তুতি। এর মধ্যে সক্রিয় আওয়ামী লীগও। তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। আর এ নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি আছে স্থানীয় পর্যায়ে।

আজকের জনসভায় অংশ নিতে সিলেটে পৌঁছেছেন ঐক্যফ্রন্ট প্রধান কামাল হোসেনসহ কয়েকজন শীর্ষনেতা। বাকিরা যাবেন আজ ভোরে।

আবার জনসভাস্থলের কাছাকাছি ডাকা সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালনে নগরীতে আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ নেতারাও।

দুই পক্ষেরই কর্মসূচিকে ঘিরে সিলেটে চাপা উত্তেজনাও আছে। এর মধ্যে দুই পক্ষই আশাবাদী যে, তিনঘণ্টা আগে-পরে দুটি কর্মসূচিই শান্তিপূর্ণই হবে।

গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি ঐক্যের ঘোষণা দেন ড. কামাল হোসেন। প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ২৩ অক্টোবর সিলেটে জনসভার ডাক দিয়েছিল তারা। তবে পুলিশ অনুমতি না দেয়ায় তা একদিন পেছানো হয়। আর বুধবারের জনসভায় আর আপত্তি করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

বেলা দুইটায় জনসভাটি ডাকা হয়েছে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে। জনসভার আগে সিলেটে হজরত শাহজালাল ও শাহপরানের (রহ.) মাজার জিয়ারতও করবেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

অন্যদিকে বেলা ১১টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় সরকারের উন্নয়ন প্রচারণায় লিফলেট বিতরণ করবে করবেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রেজিস্ট্রারি মাঠের সমাবেশস্থল থেকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিস্থলের অবস্থান ৩০০ গজ দূরে। মঙ্গলবার দুপুরে হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের প্রচারণা শুরু করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

এর মধ্যেই ঐক্যফ্রন্টের জনসভাকে ঘিরে ব্যাপক প্রচার। পাশাপাশি নগরজুড়ে চলছে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের মাইকিং-লিফলেট বিতরণ।

মঙ্গলবার বিকালেই বিমানে করে সিলেটে এসে পৌঁছেন কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মো. শাহজাহান, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু, ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়া সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। তারা সিলেট শহরেই রাতযাপন করে সকালে মাজার জিয়ারত করবেন।

ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা জেএসডি প্রধান আ স ম আবদুর রব রাতে সড়কপথে সিলেটে যান। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন নেতা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ভোরে বিমানে করে সিলেট যাবেন বলে জানানো হয়েছে আগেই।

লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনসভার আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয় গতকাল দুপুর ১২টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে। এতে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সমাবেশে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন কামাল হোসেন।’

এই নেতার দাবি, ‘এই জনসভা নিয়ে সিলেটের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন,‘উন্নয়নের প্রচারণা শুরু করেছি। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এর ধারাবাহিকতায় আজ  বেলা ১১টায় কোর্ট পয়েন্টে লিফলেট বিতরণ করা হবে।

তবে দুইপক্ষের কর্মসূচি ঘিরে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন না সিরাজ।

নিরাপত্তা জোরদার

ঐক্যফ্রন্টের জনসভা ও আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ ঘিরে পুরো সিলেটে নগরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘১৪ শর্তে রেজিস্ট্রারি মাঠে জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত শর্ত ছাড়াও জনসভার দিনে নগরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাড়তি নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকবে।’

দুইপক্ষের কর্মসূচি থাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নির্ধারিত স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলেও জানান পরিতোষ ঘোষ।

(ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/জিএম/এআর)