শেভরনের পাঁচ কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিশ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:৫০

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের শ্রমিক সরবরাহ লেবার টেন্ডার সিডিউলে অনিয়ম ও লাইসেন্স জালিয়াতির অভিযোগে বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টের দায়িত্বে নিয়োজিত শেভরন বাংলাদেশের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ আদালত থেকে লিগ্যাল নোটিশ করা হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেছেন শেভরন বাংলাদেশের বর্তমান লেবার সবরবাহকারী প্রতিষ্ঠান রহমান ট্রেডার্সের পক্ষে হবিগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক। আর ওই লিগ্যাল নোটিশ নিয়ে বিবিয়ানা এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। একই সাথে আগামী সাত দিনের মধ্যে কারণদর্শানো না হলে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করার আল্টিমেটামও দেয়া হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুলাই শেভরন বাংলাদেশ-এর কন্ট্রাক্ট এডমিনিস্ট্রেটর মো. গোলাম তামজিদ এক মেইল বার্তায় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের চারটি প্যাডের লেবার সার্ভিস (শ্রমিক সরবরাহ) দরপত্র আহ্বান করেন। ওই দরপত্রে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের ২২ জন ভেন্ডর ঠিকাদারকে আহ্বান জানানো হয়। ওই দরপত্রে প্রধান শর্ত দেয়া হয় প্রত্যেক ভেন্ডর বা ঠিকাদারকে দরপত্র জমাদানের সময় তাদের ঠিকাদারি শ্রমিক সরবরাহ অফারের সাথে বাংলাদেশ কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আউট সোর্সিং লাইসেন্সের কপি জমা দিতে হবে। অন্যথায় দরপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

বিষয়টি গত ২৫ জুলাই শেভরন বাংলাদেশের সব ভেন্ডরদের এক মিটিংয়ে কন্ট্রাক্ট ডিপার্টমেন্ট ও কমিউনিটি রিলেশন অফিসাররা ঠিকাদারদের অবগত করেন। মিটিংয়ে আবার উল্লেখ করা হয়, আউট সোর্সিং লাইসেন্সের কপি জমা দান না করলে দরপত্রটি বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু গত ২৭ আগস্ট দরপত্র জমাদানের সময় কিছুসংখ্যক ঠিকাদার অসাধু উপায়ে অন্যের আউট সোর্সিং লাইসেন্স কম্পিউটারে স্ক্যান করে নিজের নাম ও প্রতিষ্ঠানের নাম লিখে নকল লাইসেন্স বানিয়ে দরপত্র জমা দেন। পরবর্তীতে ওই ভুয়া লাইসেন্স জমাদানকারীদের শেভরন বাংলাদেশ বিজয়ী ঘোষণা করলে এ নিয়ে বিপত্তি বাঁধে। বিষয়টি শেভরন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে অবগত করা হয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন সঠিক উত্তর না পেয়ে লেবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রহমান ট্রেডার্স ওই দরপত্র কোটেশন বাতিলের দাবি জানিয়ে হবিগঞ্জ জজকোর্ট থেকে শেভরন বাংলাদেশের পাঁচ কর্মকর্তাকে বিবাদী করে সাত দিনের সময় দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

যাদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তারা হলেন- শেভরন বাংলাদেশের কন্ট্রাক্ট এডমিনিস্ট্রেটর মো. গোলাম তামজিদ ও মো. আক্তারুজ্জামান, কান্ট্রি ডিরেক্টর পাবলিক রিলেশন ডিপার্টমেন্ট প্রধান ওবায়দুল্লাহ আল এজাজ, বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্ট সুপারিন্টেডেন্ট ও বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টের পাবলিক রিলেশন অফিসার ইমাম হাসানকে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মেসার্স রহমান ট্রেডাসের পরিচালক আমিনুর রহমান স্বপন বলেন, আমিসহ সহকর্মী ঠিকাদাররা বারবার শেভরন বাংলাদেশকে ই-মেইলের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানালেও এখন পর্যন্ত তারা কোন উত্তর দেয়নি। তাই আমরা চরম উদ্বিগ্ন ও সংশয়ের মধ্যে রয়েছি। আমরা ওই লেবার সার্ভিসের কোন অনিয়ম জালিয়াতির কোন সু-উত্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। সাত দিনের ভেতরে এর জবাব না দেয়া হলে আমরা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনের প্রস্তুতি নিয়েছি।

এ ব্যাপারে শেভরন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ) পাবলিক রিলেশন প্রধান ওবায়দুল্লাহ আল এজাজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। তারা এখনো লিগ্যাল নোটিশটি হাতে পাননি।

এ ব্যাপারে বিবিয়ানা গ্যাস প্লান্টের পাবলিক রিলেশন অফিসার ইমাম হাসান বলেন, আমরা এখনো লিগ্যাল নোটিশ পাইনি। ওই লিগ্যাল নোটিশ পেলে আইন মোতাবেক জবাব দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে শেভরন বাংলাদেশের কন্ট্রাক্ট এডমিনিস্ট্রেটর মো. গোলাম তামজিদের সাথে বারবার সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাকে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন জবাব দেননি।

এ ব্যাপারে লিগ্যাল নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমার মুয়াক্কেলের সাথে শেভরন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা সু-বিচার করেননি। তাই লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। তারা অচিরেই এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে ওই লেবার কোটেশন বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান না করলে আমরা উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :