র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের হাত ভাঙল দুর্বৃত্তরা
র্যাবের গুলিতে পা হারিয়ে আলোচনায় আসা লিমন হোসেনকে এবার পিটিয়ে হাত ভেঙে দিল দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার সাভারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর একটি প্রতিষ্ঠান দখলের চেষ্টাকালে এই ঘটনা ঘটে।
সাভারে আশুলিয়ার মির্জানগর এলাকায় গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের বিশ্ব পিপলস হেলথ অ্যাসেম্বল-পিএইচএ ভবনে ঢুকে ভাঙচুর, লুট, মারধরসহ নারী শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অনার্স পড়ছেন র্যাবের নির্যাতনে পা হারানো ঝালকাঠির লিমন হোসেন। তিনি ভাঙচুরের কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে হামলাকারীরা তাকে আঘাত করে হাত ভেঙে দেয়। লিমন বর্তমানে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত লিমন জানান, সকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বহিরাগতদের ভিড় দেখে সেখানে গিয়ে তার সহপাঠীদের লাঞ্ছিত হতে দেখেন। এ সময় প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তার ডান হাত ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা। এসময় তার অন্য সহপাঠীদেরও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করে।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতুরিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন লিমন। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রথমে তাকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। জীবন বাঁচাতে সেখানে তার বাম পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।
দুর্বৃত্তরা যে প্রতিষ্ঠানটিতে ভাঙচুর চালিয়ে দখলের চেষ্টা করেছে সেই প্রতিষ্ঠানটি জাফরুল্লাহ চৌধুরী পরিচালনা করেন, যিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশনে সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদকে জড়িয়ে অবান্তর কথা বলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় পড়েছেন। এরপর তার বিরুদ্ধে জমি দখল ও চাঁদাবাজির তিনটি এবং মাছ চুরির একটি মামলাও হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য পিএইচএ- এর পরিচালক অনিল কুমার ভৌমিকের অভিযোগ, শুক্রবার সকালে মির্জানগর এলাকায় ১৫ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত পিএইচএ ভবনের মালিকানা দাবি করে কটন টেক্সটাইল ক্রাফটস লিমিটেড নামের ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়া হয়। এ সময় বহিরাগতরা ভবনে ভাঙচুর, মূল্যবান মালামাল লুট, হোস্টেলে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের মারধর ও গাছপালা কেটে ফেলে। বাধা দিতে গেলে তাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধরও করা হয়। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করতে গেলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান। ঘটনাটি ঘটেছে কি না, সেটিও জানেন না বলে দাবি করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)