অ্যাম্বুলেন্স যখন শিশুদের খেলনা গাড়ি

রেজাউল করিম, টাঙ্গাইল
| আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৯ | প্রকাশিত : ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৩৮

অ্যাম্বুলেন্স যেখানে রোগীকে দ্রুত স্থানান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেখানে হাসাপাতাল ক্যাম্পাসে অকেজো দুটি অ্যাম্বুলেন্স পড়ে রয়েছে। অথচ কোন ভ্রুক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। অ্যম্বুলেন্স ছাড়াই চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম। এমন চিত্র নজরে পড়ল টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

অযতœ, অবহেলা আর মেরামতের অভাবে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দুটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগীর স্বজনদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। দুর্ঘটনা কবলিত ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা রোগী নিতে হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোবাইক অথবা ব্যক্তিগত ভাড়া করা গাড়ির মাধ্যমে। যার কারণে রোগীর স্বজনদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নষ্ট দুটি অ্যাম্বুলেন্স বাইরে পড়ে আছে। আর সেই অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে উঠে ৪-৫ জন ছেলে খেলনা গাড়ির মতো খেলা করছে। তারা বারবার গাড়ির ভেতরে ঢুকছে আর বেরুচ্ছে। তাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তারা সত্যি কোন গাড়ি নিয়ে খেলা করছে, নাকি খেলনা গাড়ি নিয়ে খেলা করছে। তাদের বাধা দেয়ারও যেন কেউ নেই। অবুঝ ওই শিশুরা প্রতিদিন এসে নষ্ট অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে খেলা করে। তাদের কেউ কোন প্রকার বাধা দেয় না।

জানা গেছে, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০৯ সালে একটি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হওয়ার পর ২০১০ সালে নতুন আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়। যার মূল্য ৮০ লাখ টাকার বেশি। তখন থেকেই আগের অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে থাকে পরিত্যক্ত অবস্থায়। কয়েক বছর চলার পর নতুন অ্যাম্বুলেন্সটিও বিকল হয়ে যায়। এর পরে মেরামত না করায় এক বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে সেটিও। অ্যাম্বুলেন্স দুটি মেরামতের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। ভূঞাপুর উপজেলার তিন লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতাল। এছাড়াও এই হাসপাতালের অধীনে রয়েছে ঘাটাইল উপজেলার কিছু অংশ। মুমূর্ষু রোগী পরিবহনে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকলেও তা দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় জনগণের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা রোগীদের নিতে নানান ভোগান্তির শিকার হয়ে অক্সিজেনের অভাবে অনেক মুমূর্ষু রোগীর রাস্তাতেই মৃত্যু হচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত অথবা একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানান এলাকার সচেতন মহল ও চিকিংসা নিতে আসা রোগীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সামা বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হওয়ার পর থেকেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ও ১৫ অক্টোবর আবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ না দিলে আমাদের কিছুই করার নেই। প্রতিনিয়ত আমারা যোগাযোগ করছি। জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন। তিনি দ্রুত এই হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়ার দাবি জানান।

(ঢাকাটাইমস/৩নভেম্বর/নিজস্ব প্রতিবেদক/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :