যোগাযোগটা যেন বন্ধ না হয়

আরিফুর রহমান
 | প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫১

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেক আশা-সংশয়ের সংলাপ শেষ হয়েছে। এখন রাজনৈতিক মহলে চলছে এর হিসাব-নিকাশ। দুই প্রধান পক্ষও সংবাদ ব্রিফিংয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেখানে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও, কেউই বলেননি সংলাপ ব্যর্থ হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের নেতা যেমন বলেছেন, সংলাপ ভালো হয়েছে, তবে সমাধান পাওয়া যায়নি। বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, তারা সন্তুষ্ট নন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার তিনটি দাবির সঙ্গে একমত তারা।

আশার জায়গা এখানেই। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন ধরে যাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ, তারা অন্তত এক টেবিলে বসেছেন, কথা বলেছেন, পরস্পরের কথা শুনেছেন। এটা রাজনীতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে সামনে যখন জাতীয় নির্বাচন। একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এটা জরুরি ছিল। যোগোযোগের পথ যখন খুলল তখন আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি।

এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষকেই তাদের মনের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। শুরু হওয়া যোগাযোগটা চালু রাখতে হবে। তাহলে আরও অনেক মতদ্বৈধতার মেঘ কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে নিশ্চয়।

এমনই সুর আমরা শুনেছি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। পদ্মা সেতুর কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংলাপ শেষ হয়ে যায়নি। ছোট পরিসরে আরও সংলাপ হতে পারে। ঐক্যফ্রন্ট চাইলে আবার বসবেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর দুয়ার সব সময় খোলা।

আমরাও সেটা বিশ্বাস করি। যে কোনো যৌক্তিক দাবি ও আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সাড়া দিয়ে সফল সমাধান করে দেন এটা আমরা গত ১০ বছর ধরে দেখে আসছি।

একই সঙ্গে আমরা এটাও মনে করি, একত্রে বসার জন্য ঐক্যফ্রন্টের চাওয়া কিংবা প্রস্তাব পাওয়ার অপেক্ষা করে থাকাও কোনো কাজের কথা নয়। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে যদি কোনো বিষয়ে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনার দরকার হয়, ক্ষমতাসীন দলও তাদের ডাকতে পারে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী তা-ই করেছিলেন, যদিও সেবার সাড়া দেয়নি বিএনপি। সাড়া না দেয়াটা যে তাদের জন্য ইতিবাচক ছিল না, দলটি এখন তা বুঝতে পারছে।

সংলাপের সব দাবি বা শর্ত পূরণ হবে- এমনটা আশা করা ঠিক হবে না। তবে আমরা আশা করি দুই পক্ষই তাদের এখতিয়ার ও সাধ্যের ভেতর থেকে কিছুটা হলেও ছাড় দেবে। আর নির্বাচন ঘিরে তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া যোগোযোগটা যাতে নষ্ট না হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য এটা প্রয়োজন। সরকার ও বিরোধী দল- দুই পক্ষের জন্যই তা মঙ্গলকর।

আরিফুর রহমান: সম্পাদক, দৈনিক ঢাকা টাইমস

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজপাট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা