আমন ধানে পাতা মোড়ানো রোগে দিশেহারা কৃষক

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় রোপা আমন ধানে দেখা দিয়েছে পাতা মোড়ানো রোগ। পোকার আক্রমণে দিনদিন পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ধান রক্ষায় কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে দিশেহারা তারা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, আর কয়েকদিন পরে গাছে ধান আসার কথা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পোকার আক্রমণ। ধানগাছ প্রথমে হলুদ ও পরে শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল পাচ্ছে না কৃষকরা। ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু পোকা আর পোকা।

পোকার হাত থেকে ফসল রক্ষায় বাজারে পাওয়া কীটনাশক এনে জমিতে স্প্রে করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আমনের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। তাদের আশঙ্কা, সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে এবার রোপা আমন উৎপাদন ব্যাহত হবে। সরজমিন ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের হাটগারা গ্রামের কৃষক রুবেল সেখ জানান, ‘তার প্রায় ৮ বিঘা জমিতে পোকা আক্রমণ করেছে। কীটনাশক ¯েপ্র করেও এই পোকা দমন করা যাচ্ছে না। কৃষি কর্মকর্তাদেরও মাঠে পাওয়া যাচ্ছে না।’

তার মতো একই গ্রামের কৃষক আলতাব মন্ডল, আব্দুল হামিদ, সাদ্দাম হোসেন, হযরত আলী, জাফর সেখ ও সুজনসহ অনেকেই জানালেন তাদের জমিতে পোকার আক্রমণের কথা।

বলেন, ‘সুদে ঋণ নিয়ে এবার আমন ধান চাষ করেছিলেন তারা। ধান বের হতে না হতেই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই পোকা ধান গাছের পাতা খেয়ে বিবর্ণ করে ফেলছে। কৃষি অফিস থেকেও কোনো পরামর্শ পাচ্ছেন না তারা। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই সার বিক্রেতার পরামর্শে কীটনাশক ¯েপ্র করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’

তবে স্থানীয় কৃষিবিভাগ কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, কিছু কিছু আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো পোকা রোগ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমরা মাঠে গিয়েছিলাম। তবে যে পোকা আক্রমণ করেছে তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এসব রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে।

এ ব্যাপারে কামারখন্দ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আনোয়ার সাহাদ জানান, ‘পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সরেজমিনে গিয়েছিলাম। কৃষকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই পোকা দমনে আমরা তৎপর রয়েছি।’

ঢাকাটাইমস/০৪নভেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর