দেড়যুগ পর যৌতুকের টাকা ফিরিয়ে দিলেন রহিম

রেজাউল করিম, টাঙ্গাইল
| আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ২২:৫৪ | প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:০৮

যৌতুক নেয়া ভালো নয়, এটি জানেন টাঙ্গাইলের আব্দুর রহিম বাদশা। কিন্তু তার জীবনেই ভুল হয়ে গেছে। বাবা-মা যে কনেপক্ষ থেকে টাকা নিয়ে বসে আছে, সেটি তিনি জেনেছেন পরে। আর প্রতিদিন দংশন হচ্ছিল বিবেক। অপরাধবোধের হাত থেকে বাঁচতে তাই তিনি ফেরত দিয়েছেন ১৮ বছর পর।

বিরল এই এই ঘটনাটি গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামে। শ্বশুর বাড়ির লোকজনের হাতে ফেরত দিয়েছেন ২০০০ সালে নেয়া ৪০ হাজার টাকা।

একই উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নবগ্রামের আব্দুল হালিমের মেয়ে লতা বেগমকে বিয়ে করেছিলেন রহিম। পরে জানতে পেরেছেন, মেয়ের পরিবারের কাছ থেকে যৌতুক নিয়েছেন তার বাবা।

সে সময় বেকার ছিলেন রহিম। তবু ঘটনাটি জানতে পারার পর বাবাকে বোঝাতে চেষ্টা করেন আপ্রাণ। কিন্তু যে যুবক আয় করে না, তার কথা পরিবার কী আর শোনে?

এখন আর্থিক দুরাবস্থা দূর হয়েছে রহিমের। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারেন। আর সেই ভুল শোধরানোর খবরে এখন প্রশংসার ফুলঝুরি এলাকাজুড়ে। রহিম এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বুধবার তার বিয়ের ১৮তম বার্ষিকীতে। এই দিনটিকে স্মরণীয় করার পাশাপাশি যৌতুকলোভীদেরও একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই ঘটা করে সচেতন করতে বুধবার রহিম যৌতুকের টাকা ফেরত দেন। সঙ্গে উপহার দেন গৃহপালিত পশুও।

রহিম বাদশা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। আমি যখন বিয়ে করি, তখন বেকার ছিলাম। সে সময় কখনো চিন্তাও করিনি যে, যৌতুক নিয়ে বিয়ে করব। কিন্তু এখন আমি কর্মজীবী। সামর্থ্য হওয়ায় এত বছর পর হলেও যৌতুকের টাকা ফেরত দিলাম। যৌতুক নেয়া ও দেয়া দুইটিই অপরাধ। আমি চাইব, সমাজ তথা দেশের মানুষ যেন যৌতুক না নেন।’

রহিমের আত্মীয় স্বপন বলেন, ‘আমরা খুব খুশি। তার এ রকম সিদ্ধান্তে আমাদের অনেক ভালো লাগছে। তার মতো সমাজের আরও যারা আছেন, তারাও যদি এমন কাজ করতেন, তাহলে ভালো হতো। আর যেন কেউ যৌতুক না নেন।’

রহিমের শ^শুর আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমার জামাতার এমন বুদ্ধিমত্তা দেখে আমার খুব ভালো লাগছে। আমি চাই, আর যেন কেউ যৌতুক নিয়ে বিয়ে না করেন। এটা একটি সামাজিক ব্যাধি। এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৭নভেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :