মুক্তির পর অজ্ঞাত স্থানে আসিয়া

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ২০:৫৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

আট বছর ধরে সাজা ভোগের পর অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পেলেন মৃত্যুদ- প্রাপ্ত আসিয়া বিবি। সম্প্রতি মৃত্যুদ- থেকে তাকে খালাস করে দেয় পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মুলতান শহরের একটি জেল থেকে মুক্তির পর আসিয়াকে মুলতান থেকে বিশেষ বিমানে করে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমান বন্দর থেকে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বলেছে, নিরাপত্তাগত কারণে আসিয়া বিবির অবস্থানস্থল জানানো হবে না।  

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আসিয়া বিবিকে খালাসের রায় দেওয়ার পর দেশজুড়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। আসিয়া বিবি পাকিস্তান ত্যাগ করেছেন বলে কোনো কোনো গণমাধ্যম যে খবর দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

২০১০ সালে ধর্ম অবমাননার দায়ে মৃত্যুদ- প্রাপ্ত আসিয়া বিবিকে সম্প্রতি মৃত্যুদ- থেকে তাকে খালাস করে দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। এদিকে, আসিয়া বিবির খালাসের পরেও দেশজুড়ে রায়ের প্রতিবাদে চলা বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে কারাগারেই থাকতে হয়েছিল।

এ ব্যাপারে তার স্বামী জানান, এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি। যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ব্রিটেনের কাছেও আশ্রয় চেয়েছিলেন তিনি। আসিয়ার আইনজীবী জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশই তাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা বলেছে। কট্টরপন্থীদের হুমকির মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন তার আইনজীবী সইফুল মুলুকও।

আসিয়ার মুক্তির খবরে ফের নতুন করে অচল হওয়ার মুখে পাকিস্তান। ইতিমধ্যেই ইমরানের জোটসঙ্গী তেহরিক ই লাবাইকের তরফে জানানো হয়েছে, আসিফাকে মুক্তি দিয়ে চুক্তিভঙ্গ করেছে পাক সরকার। এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেই শক্তি প্রদর্শন করা হবে।

২০০৯ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বালতিতে পানি নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশী মহিলার সঙ্গে কলহ বাধে খ্রিস্টান মহিলা আসিয়া বিবির। কলহের সময় মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগ আনা হয় আসিয়ার বিরুদ্ধে। তা নিয়েই গত আট বছর ধরে লাগাতার তোলপাড় হয়েছে পাক রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন।পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট এবং পোপ ফ্রান্সিস, পরপর দুই খ্রিস্টান ধর্মগুরু তার মুক্তির জন্য পাক সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি, আসিয়ার মৃত্যুদ-ের দাবিতে চরমপন্থী অবস্থান নেয় কট্টরপন্থী রাজনৈতিক ও জঙ্গি সংগঠনগুলিও। আসিয়ার মুক্তির পক্ষে কথা বলায় আততায়ীদের হাতে খুন হন পাকিস্তানের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টি এবং পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসির।

(ঢাকাটাইমস/০৮নভেম্বর/একে)