জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:১০ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মধ্যাহ্ন বিরতির পর জোড়া আঘাত। প্রথমে পিটার মুরকে ফেরালেন মেহেদী মিরাজ। খানিক বাদে তার ওভারেই রান আউট রেগিস চাকাভা। ১৯৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারাল জিম্বাবুয়ে। এরপর মিরাজ তুলে নিলেন ডেনাল্ড তিরিপানোকেও। টেন্ডাই চাতারা চোটে, তিনি ব্যাট করতে পারবেন না। যার মানে হল আর ২ উইকেট নিলেই জয় নিশ্চিত হয়ে যাবে টাইগারদের।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৭৭.৩ ওভারে ৭ ‍উইকেটে ২০১ রান সংগ্রহ করেছে জিম্বাবুয়ে। ব্রেন্ডন টেলর ৮৮ আর মাভুতা শূন্য রানে ক্রিজে আছেন।

বাংলাদেশের দেয়া ৪৪৩ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দুই উইকেটে ৭৬ রান সংগ্রহ করে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল জিম্বাবুয়ে। বুধবার দিনের শেষ সেশনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে সফরকারীরা। ওপেনিং জুটিতে ৬৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারি। ইনিংসের ২৩তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মুমিনুল হকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাসাকাদজা। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ২৫ রান। এরপর ২৫তম ওভারে ব্রায়ান চারিকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তাইজুল ইসলাম। তিনি করেন ৪৩ রান। দিন শেষে ব্রেন্ডন টেইলর ৪ রান করে ও শন উইলিয়ামস ২ রান করে অপরাজিত থাকেন। আজ আলোকস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ আগেই খেলা শেষ করে দেন আম্পায়াররা।

প্রথম ইনিংস শেষে ফলোঅনে পড়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে বুধবার নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেটে ২২৪ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশের লিড ছিল ২১৮ রান। সবমিলিয়ে জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪৪৩ রান।

বাংলাদেশ আজ ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে। দলীয় ২৫ রানে চারটি উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসকে ফেরান জিম্বাবুয়ের পেসার কাইল জারভিস। ওভারের প্রথম বলে জারভিসের ফাঁদে পা দেন ইমরুল। অফ স্টাম্পের বাইরের বল পয়েন্ট দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন ইমরুল। কিন্তু টাইমিং হয়নি। বল গিয়ে জমা পড়ে ব্রান্ডন মাভুতার হাতে। ১২ বলে ৩ রান করে ফেরেন ইমরুল। এরপর তৃতীয় বলে দারুণ ডেলিভারিতে লিটনকে বোল্ড করেন জারভিস।

এরপর দ্রুতই ফেরেন মুমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে উজ্জ্বল মুমিনুল ফেরেন মাত্র ১ রান করে। ডোনাল্ড তিরিপানোর করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে ধরা পড়েন তিনি। প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা মশফিকুর রহিমও টিকতে পারেননি। মাত্র সাত রান করে ফিরে যান তিনি। ইনিংসের ১৩তম ওভারে তিরিপানোর বলে মাভুতার হাতে ক্যাচ হন মুশফিক।

এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ মিথুন। ব্যক্তিগত ৬৭ রানে ফিরে যান অভিষিক্ত খেলোয়াড় মিথুন। তারপর আরিফুল হকও ব্যক্তিগত ৫ রানে ফিরে যান। এরপর মিরাজের সঙ্গে ৭৩ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন রিয়াদ।

অধিনায়ক রিয়াদ সেঞ্চুরি করেন। ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন রিয়াদ। আর প্রথম ইনিংসে ৬৮ রান করে অপরাজিত থাকা মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ২৭ রান করে।

মিরপুরে গত রবিবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ সাত উইকেটে ৫২২ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। দলের পক্ষে মুশফিকুর রহিম ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ২১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল হক। জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে কাইল জারভিস ৭১ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট শিকার করেন।

এরপর জিম্বাবুয়ে ব্যাট করতে নেমে ৩০৪ রানে অলআউট হয়। জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর সেঞ্চুরি করেন। ১১০ রান করে আউট হন তিনি। ৮৩ রান করেন পিটার মুর। ৫৩ রান করেন ব্রায়ান চারি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাইজুল ইসলাম ৫টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩টি ও আরিফুল হক ১টি করে উইকেট শিকার করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫নভেম্বর/এসইউএল/এবিএ)