রণদা প্রসাদের ১২২তম জন্মজয়ন্তী

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৩২

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার আজ ১২২তম জন্মজয়ন্তী। এ উপলক্ষে কুমুদিনী কল্যাণে সংস্থা, কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও ভারতেশ্বরী হোমস নানা কর্মসূচী পালন করছে।

কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে প্রার্থনা, আলোচনা সভা, কুমুদিনী হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং ভারতেশ্বরী হোমসে ছাত্রীদের মনোজ্ঞ ডিসপ্লে।

এছাড়া কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসক ও সেবিকারা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড নানা রঙে সাজিয়ে সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জলন করবেন।জন্মজয়ন্তীকে ঘিরে কুমুদিনী ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।  

১৮৯৬ সালের ১৫ নভেম্বর রণদা প্রসাদ সাহা ঢাকার অদূরে সাভারের কাছুর গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লৌহজং নদী বিধৌত মির্জাপুর গ্রামে। বাবার নাম দেবেন্দ্র নাথ সাহা। মায়ের নাম কুমুদিনী সাহা।

তিনি অতিদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমায়ের অবহেলার কারণে তিনি ১৪ বছর বয়সে কলকাতায় পাড়ি জমান। সেখানে বাদাম বিক্রিসহ অনেক কাজ করতে হয় তাকে।

ভাগ্রক্রমে তিনি সেনাবাহিনীর বেঙ্গল কোরে যোগ দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইরাকে যান। সেখানে তিনি এক অগ্নিকাণ্ড থেকে হাসপাতালের রোগীদের রক্ষা করেন। পরে পঞ্চম জর্জের সঙ্গে ইংল্যান্ডে দেখা করে কমিশনপ্রাপ্ত হন। কিছুদিন পর চাকরি বাদ দিয়ে রেলওয়েতে টিটিইর চাকরি নেন।

এর কিছুদিন পর সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে কয়লা ও পাটের ব্যবসা করে বেশ লাভবান হন। এরপর তিনি জাহাজের ব্যবসা শুরু করেন। এতে তার ভাগ্য আরো  সুপ্রসন্ন হতে থাকে। তিনি তার কষ্টে উপার্জিত সম্পদ শুধু নিজের ভোগ-বিলাসে ব্যয় না করে আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করেছেন।

এক্ষেত্রে প্রথমে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করা মায়ের নামে ১৯৩৮ সালে মির্জাপুরে কুমুদিনী ডিসপেন্সারি চালু করেন। যা ১৯৪৪ সালে হাসপাতালে রূপ নেয়। পরবর্তীতে তিনি নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ এবং গ্রামবাংলার হতদরিদ্র ছাত্রদের জন্য মানিকগঞ্জে বাবার নামে দেবেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়া তিনি মির্জাপুর কলেজ ও মির্জাপুর এসকে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

কিন্তু এই মানবপ্রেমিককে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা রেহাই দেয়নি। ৭ মে নারায়নগঞ্জের বাসা থেকে তাকে ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়।

ঢাকা টাইমস/১৫ নভেম্বর/প্রতিনিধি/এএইচ