মনোনয়ন সাক্ষাৎকার

আন্দোলনে ভূমিকা জানতে চাইল বিএনপি

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২১:১১

শরিফ রুবেল

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাদের ভূমিকার বিষয়টি জানতে চেয়েছে মনোনয়ন বোর্ড।
মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে যৌক্তিকতা ছাড়াও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকতে সক্ষম হবে কি না, দল থেকে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হলে তার পক্ষে কাজ করবে কি না সেসব প্রশ্নও করেন বোর্ডের সদস্যরা।

লন্ডন থেকে যুক্ত হওয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক, সুখে দুঃখে পাশে থাকার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।
নিজে মনোনয়ন চাইলেও দল থেকে বেশি যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে তার পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সাক্ষাৎকার দিতে আসা নেতারা। বহিরাগত কাউকে মনোনয়ন না দেয়ারও জোরালো দাবি জানান তারা।

সোমবার সকাল দশটা থেকে রাত অবধি বরিশাল ও খুলনা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ছাড়া লন্ডন থেকে তারেক রহমান স্কাইপে প্রার্থীদের নানা প্রশ্ন করেছেন।

আগের দিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সাক্ষাৎকার দেন। গতকাল দেন বরিশাল ও খুলনা বিভাগের প্রার্থীরা সাক্ষাৎকার দেন। মঙ্গল ও বুধবার বাকি পাঁচ বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।

বরিশাল-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমি মেনে নেব, এই আশ্বাস দিয়ে এসেছি।’

পটুয়াখালী-৩ আসনের সাক্ষাৎকার দিয়ে এসে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেন, ‘রহমান আমাকে পটুয়াখালীর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিগত সময়ের নির্বাচন নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন। আমি উত্তর দিয়েছি। আশা করি দলীয় মননোয়ন আমি পাব। আর যদি নাও পাই যাকেই মননোয়ন দেয়া হয় তার পক্ষে কাজ করব।’

ভোলা-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হায়দার আলী লেলিন বলেন, ‘বিগত দিনে দলে কী অবদান সে খবর দলের কাছে আছে বলেই প্রশ্ন শুরু করেন তারেক রহমান। এরপর জানতে চান গত ১২ বছর সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলের দ্বারা কী ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন? তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে কীভাবে ছিলেন? আমি সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছি।’

ভোলা-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য নাজিমুদ্দিন আলম বলেন, ‘মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজ এলাকার কর্মী-সমর্থকদের আগলে রাখতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বারবার জানতে চেয়েছে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড।’

একই আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘আন্দোলন কর্মসূচি, নেতাকর্মীদের পাশে থাকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। আমি বলেছি সকল আন্দোলন সংগ্রামে একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে মাঠে ছিলাম।’

ভোলা-২ আসনের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, ‘মনোনয়ন পাই বা না পাই দলের স্বার্থে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই।’
পটুয়াখালী-২ আসনে মুনির হোসেন বলেন,  ‘দলের সিদ্ধান্ত কোনোদিন অবমাননা করিনি, করবও না। যিনি মনোনয়ন পাবেন তার পক্ষে কাজ করব।
সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া পটুয়াখালী-২ আসনের শহিদুল আলম তালুকদার বলেন, ‘বলে এসেছি রাজপথে ছিলাম এবং এখনো আছি। তবে দল যদি আমাকে মননোয়ন নাও দেন তারা যাকে দেবেন তাকে জয়যুক্ত করেই ঘরে ফিরব।’

চুয়াডাঙ্গা-২ এর মনোনয়ন প্রত্যাশী হাজী লিয়াকত আলী শাহ বলেন, ‘অনেক প্রশ্নের পর দলের পক্ষে যে কোনো সিদ্ধান্ত থাকবো বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। মনোনয়ন যে পাবে তাতে সমস্যা নেই। তবে হুট করে নেতা বনে যাওয়া, বহিরাগত কাউকে মনোনয় না দেয়ার অনুরোধ করেছি।’

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছার) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই আসন বিএনপি অধ্যুষিত হলেও দীর্ঘদিন জামায়াতকে ছাড় দেয়া হয়। এবার এটা না করে স্থানীয় নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ করেছি।’