রায়পুরায় সংঘর্ষ: আরও এক হত্যা মামলা

নরসিংদী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ২১:২৭

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ও নিলক্ষা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে তিনজন নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিলক্ষার সোহরাব হত্যার ঘটনায় নিলক্ষা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হক সরকারসহ ২৬ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।

নিহত সোহরাবের মা সাফিয়া খাতুন বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে রায়পুরা থানায় মামলাটি করেন।

এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে দুইজনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তাদের পরিবার।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন উল কাদির হত্যা মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও নিখোঁজের বিষয়ে অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন।

এর আগে রবিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাঁশগাড়ীর তোফায়েল রানা হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হকসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়। তোফায়েল রানার বাবা আবদুল্লাহ ফকির ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হককে প্রধান আসামি করে ৪৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এদিকে নিলক্ষার সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বাঁশগাড়ীর বালুয়াকান্দি এলাকার জয়নাল মিয়ার ছেলে কাউছার ও রাজনগর এলাকার হয়রত আলীর ছেলে আবদুল হাই নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করছেন পরিবারের লোকজন। তাদের অভিযোগ তাদের টেঁটাবিদ্ধ লাশের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে তারা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও লাশ খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে পরিবারের লোকজন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোন সুরাহা মেলেনি।

এ ব্যাপারে নিখোঁজ কাউছারের বড় ভাই বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য গয়েছ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ভাই নিখোঁজ হওয়ার পরদিন শনিবার আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার টেঁটাবিদ্ধ লাশ দেখে পুলিশকে জানাই। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও আমার ভাইয়ের লাশের কোন সন্ধান দিতে পারেনি।’

অপর নিখোঁজ আবদুল হাইয়ের ছোট ভাই আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমার ভাই এক সচিবের গাড়ির ড্রাইভার ছিল। সে বৃহস্পতিবার বাড়িতে আসার পর শুক্রবার থেকে নিখোঁজ। পরে ফেসবুকে তার লাশের ছবি দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানাই। কিন্তু এখনো তার কোন খোঁজ পাচ্ছি না। হয়ত কেউ তার লাশটি গুম করে ফেলেছে। তা না হলে চার দিনেও কেন কোন সন্ধান নাই কেন।’

গত শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলমান বিরোধের জের ধরে প্রয়াত চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের অনুসারী কবির সরকারের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত হাফিজুর রহমান শাহেদ সরকারের অনুসারী জাকির হোসেনের সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে তোফায়েল রানা নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ১০ জন।

এরই জেরে একইদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিলক্ষা ইউনিয়নেও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের অনুসারী ছমেদ আলীর নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হকের অনুসারী শহিদ মেম্বারের সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এতে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে প্রথমে তাজুল ইসলামের সমর্থক সোহরাব হোসেন ও পরে আবদুল হক সরকারের সমর্থক স্বপন মিয়া নামে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হয় কমপক্ষে ৪০ জন। এ ঘটনায় পুলিশ নিলক্ষা এলাকা থেকে নয়টি আগ্নেয়াস্ত্র, চার রাউন্ড গুলিসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় অস্ত্র মামলায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়। এ পর্যন্ত তিন নিহতের ঘটনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।

তবে নিহত স্বপন মিয়া হত্যার ঘটনায় বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোন মামলা করেনি পরিবারের লোকজন।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন উল কাদির বলেন, ‘বাঁশগাড়ীর সংঘর্ষে নিহত স্কুলছাত্র তোফায়েলের বাবা আবদুল্লাহ ফকির একটি মামলা করেছেন। আর নিলক্ষার সোহরাব নিহতের ঘটনায় তার মা সাফিয়া খাতুন আরও একটি হত্যা মামলা করেছেন।

এদিকে নিখোঁজ দুজনের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :