দোকান ফিরে পেতে বিধবার আকুতি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুটি দোকান ছিল স্বামীহারা শাবানা বেগমের। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা দোকান দুটি দখল করে নেয়। উল্টো তাকে হত্যার হুমকি দেয়। আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত দোকান দুটি বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে দোকানোর দখল ছাড়েনি। উল্টো ওই নারীকে দেশছাড়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে অনবরত।
রবিবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স বহুমুখি সমবায় সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবানা বেগম এই অভিযোগ করেন। এ সময় তার ছেলে মাসুম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
শাবানা বেগম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মোহাম্মদপুর টাউনহল পাকা মার্কেটে দুইটি দোকান ভাড়ার টাকাই ছিল পরিবারের আয়ের উৎস। হুমকির মুখেও পাঁচ বছর মামলা চালিয়ে অর্থসংকটে প্রতিবন্ধী এক কন্যাসহ দুই সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং দোকান দুইটি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
শাবানা বেগম বলেন, ‘২০০৮ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর চক্রটি সম্পত্তি দখল করতেই আমাকে হুমকি দিতে থাকে। আয়ের একমাত্র অবলম্বন দোকান দুটি ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট চক্রটি দখল করে নেয়। তারপর থেকে আমাকে জীবনে শেষ করার নানা অপচেষ্টা চালায়, যা এখনও অব্যাহত। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাইনি। গত পাঁচ বছরে গাড়ি, বাড়ি, সঞ্চিত সবকিছু বেহাত করেও দুই সন্তানের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে পারিনি। ছেলে মাসুম হোসেন ও প্রতিবন্ধী মেয়ে মৌসুমি বেগমকে নিয়ে অভাব-অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছি। সন্ত্রাসীদের ভয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে উঠেছি। আমার দুই সন্তানও দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’বিধবা বলেন, ‘চক্রটি ২০০০ সালে গুলশানে প্রসাদতুল্য বাড়ি দখল করে আমার মা মমতাজ বেগমকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাড়িটি দখল করে। পরে তিনি জীবন বাঁচাতে দেশত্যাগে বাধ্য হন। মোহাম্মদপুরের দোকান দুইটি মায়ের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে আমি ভোগ-দখল করে আসছি। এ নিয়ে মামলায় হেরে চক্রটি সময় ক্ষেপণের জন্যই আপিলের পর আপিল করে দীর্ঘসূত্রিতার পথ বেছে নেয়। তাদের করা তৃতীয় আপিলের রায়ও আমার পক্ষে ঘোষণার পর দীর্ঘসূত্রিতার জন্যই গত ৪ নভেম্বর হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন দাখিল করে।’
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং দুইটি দোকান ফিরে পেতে তিনি আকুতি জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন মীর ঢাকা টাইমসকে বলেন, এ ধরনের কোনো খবর আমার জানা নেই।
(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এএ/জেবি)