দুর্নীতি-সন্ত্রাস মুক্ত বাংলাদেশ হবে কি?

মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:৪৬

দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো এখন ভোটের অপেক্ষায়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে হলেও বর্তমান সরকার তাদের মেয়াদ পূর্ণ করেছে। এই সময়গুলোতে সরকারের সাফল্যের পরিমাণ যথেষ্ট হলেও কিছু কিছু বিষয়ে জনগণসহ বিরোধী দলগুলো থেকে সরকারকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে একথা সত্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

সরকারের এই সফলতাকে বিরোধীপক্ষ স্বীকার না করলেও দেশের সাধারণ জনগণ তার প্রতিফলন ভোগ করছে। সুতরাং বিভিন্নক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্যতাকে নেতিবাচক হিসাবে দেখা ঠিক হবে না। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে এখনো অনেক সময় বাকি। তবে দেশের এই উন্নয়নমুখী গতিধারাকে সফল করতে হলে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে সমর্থনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলে অনেকে মনে করছেন। সরকারের এই চলার পথে হটাৎ মাঝে মধ্যে বাধা আসলেও আসতে পারে। এ ধরনের বাধা বিপত্তি থেকে উদ্ধার হতে হলে প্রয়োজন জনগণের সমর্থন।

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের এই সমর্থন নিশ্চই আছে। তাইতো আজ স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশের জনগণ।

বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো অতীতের মতো বিরোধী পক্ষ থেকে এখন আর জ্বালাও পোড়াও হরতাল নেই। জনগণ এ ধরনের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবুও নির্বাচনের পূর্বে অথবা পরে পরিস্থিতিকে পুনরায় জ্বালাও পোড়াও হরতাল ও ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে। এই পথে ঝরে যেতে পারে কিছু মানুষের প্রাণ যার খবর পরবর্তীতে আর কেউ রাখবে না।

তবুও ওরা জীবন দেয় ওরা রক্ত দেয়। কিন্তু কার জন্য, কিসের জন্য? যারা একদিন নেতা নেত্রীদের ইঙ্গিতে রাজনীতির নামে জ্বালাও পোড়াও করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় প্রাণ দিয়েছে তাদের পরিবার এখনো ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। কে নেয় কার খবর? আবার হয়তো নেতারা কর্মীদের নিয়ে চালাবে সেই হত্যার রাজনীতি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেতা নেত্রী বা তাদের পরিবারের কারো প্রাণ যায় না। প্রাণ যায় কর্মীদের। সম্প্রতি বিএনপি অফিসের সামনে দলীয় সমর্থকদের দ্বারা পুলিশের গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর জনগণকে আবার নুতন করে ভাবিয়ে তুলেছে। তবে এবার জামায়াত নয় সরাসরি বিএনপির একক ধ্বংসলীলা। এ যাত্রায় কারো প্রাণ না গেলেও ক্ষতি হয়েছে রাষ্ট্রের। ক্ষতি হয়েছে জনগণের।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে বিএনপির আসল মুখ উন্মোচন করেছে। অথচ ফখরুল আলমগীর ও রিজভী সাথে সাথে ছাত্রলীগকে দায়ী করলেন। এখন ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শনের মাধ্যমে সত্য প্রকাশিত হলে তাদের মুখে আর কোনো কথা নেই। রাজনীতির মাঠে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে নীতিতে বিএনপি আর কতদিন চলবে?

জনগণকে এভাবে ধোঁকা দিয়ে, মিথ্যা ইতিহাস সৃষ্টি করে দলটি আজ দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। বিএনপি কি কোনোদিন তাদের এই মিথ্যা রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারবে না?

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ সার্বিক পরিস্থিতি এখন সরকারের অনুকুলে। আসছে নির্বাচনের পূর্বে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ধংসাত্মক অবস্থার সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশ তার উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে। তবে নির্বাচন পরবর্তীতে সরকারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকবে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। সরকার জনগণের এই আশা আকাক্সক্ষার প্রদীপে আলো জ্বালাতে পারবে কি?

লেখক: সুইডেনপ্রবাসী রাজনীতিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :