তারা সবাই ‘প্রতারণার খেলোয়াড়’
ফুটবল খেলার নাম করেই তারা বাংলাদেশে আসেন। তবে ফুটবল নয় এরা সবাই প্রতারণায় পারদর্শী। তাদের কারো কারো আবার পাসপোর্ট-ভিসাও নেই। দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকসহ ভার্চুয়াল বিভিন্ন মাধ্যমে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে নানাজনের কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নিচ্ছিল বড় অংকের টাকা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। ধরা পড়ে যায় র্যাবের জালে।
গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা ও বারিধারা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের এমন ১৪ জনকে আটক করে র্যাব। তাদের মধ্যে সাতজন নাইজেরিয়ান। আর বাকিরা উগান্ডা, ক্যামেরুন, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া ও মোজাম্বিকের নাগরিক।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারওয়ার বিন কাশেম।
র্যাবের দাবী, এদের প্রায় প্রত্যোককেই ফুটবল খেলার নাম করে বাংলাদেশে আসে। তাদের কারোরই এখন ভিসা কিংবা বাংলাদেশে থাকার বৈধ কাগজপত্র নেই। অবৈধভাবে তারা অনলাইনে নানা ধরনের প্রতারনার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযানে উদ্বেগের ব্যাপার ছিল এসব বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যাক্তির বাংকের চেক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ও তাদের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার পাওয়া গেছে।’
তিনি জানান, ‘র্যাব কয়েকদিন রাজধানীতে বসবাস করা বিদেশী নাগরিকদের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। তথ্য ছিল বসুন্ধরা ও উত্তরা এলাকায় বসবাসকারী এসব বিদেশীরা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপ চালাচ্ছে। পরে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা খেলোয়াড় ও ব্যবসায়ী ভিসায় বাংলাদেশে এসেছিল। তাদের পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল; আবার অনেকের এদেশে প্রবেশের কোন বৈধ কাগজও নেই। অভিযানে ২৯টি মোবাইল, দুটি ল্যাপটপ, নগদ একলক্ষ টাকা ও এক হাজার ডলার উদ্ধার করা হয়।’
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে তারা সকলেই আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের সদস্য। দশ-বারোজনের গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ফেসবুক ভুয়া একাউন্ট খুলে ব্যবসায়ী ও নারীদের টার্গেট করত এবং নিজেদের আফগানিস্থানের যুদ্ধরত সৈনিক অথবা জাতিসংঘের কর্মকতা পরিচয়ে সখ্য গড়ে তুলত। সম্পর্কের এক পর্যায় তাদের বন্ধুরা বাংলাদেশে যাবে এবং কিছু গিফট নিয়ে যাবে এমন প্রলোভন দেখাতো। গিফটগুলো পাঠানো হয়েছে এবং সেগুলো কাস্টমসে আটকে আছে জানিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিত। টাকা নেবার পরে ফেসবুক একাউন্ট ও মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে দিত। তাদের এসব অপরাধকাজে দেশের কয়েকজন সাহায্য করত। তাদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চালাচ্ছে র্যাব।
ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/এসএস/ডিএম