‘গুণগত মানে ছাড় দেয় না ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৬

অনলাইন ডেস্ক

অধ্যাপক ড. শহীদ আখতার হোসেন সম্প্রতি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন। তিনি এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (সহ-উপাচার্য), ডিন, বিভাগীয় প্রধান, প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য। দৈনিক ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের করণীয়সহ নানা বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নজরুল ইসলাম

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিশেষত্ব নিয়ে কিছু বলুন।

প্রথমত বলতে হচ্ছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বদনাম নেই। নিয়ম ভাঙা, সার্টিফিকেট বিক্রি বা পড়ায় না এ ধরনের বদনাম নেই ইস্টার্নের। আমি যেটুকু জানতে পেরেছি, এর একটা স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করা হয়। এখানে বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা মেধাবীদের দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে। আমাদের বিশেষত্ব হচ্ছে আইন অনুষদ। এটা ব্র্যান্ডেড। বাংলাদেশে যতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে শুধু তাদের সঙ্গে নয়, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এর মান অনেক ভালো।

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বাড়তি কী সুবিধা পাচ্ছেন?

আমার ধারণা ছিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ধনীর ছেলেরা পড়ে। এখন এসে দেখছি এখানে বেশির ভাগই নি¤œমধ্যবিত্ত। এমনও ছাত্র রয়েছে, যাদের আড়াই লাখ টাকা জমা পড়ে আছে। তাও তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হচ্ছে। যে যা দিচ্ছে ওটা দিয়েই তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব অন্যতম। ইস্টার্ন এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে কেমন?

বিশ্ববিদ্যালয় মানে হচ্ছে টিচিং অ্যান্ড রিচার্জ। আমাদের দেশের পাবলিক বলেন আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সবই এখনো টিচিং পর্যায়ে আছে। দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী যতটুকু ডিজিটালাইজড হয়েছে, সেই অনুযায়ী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার করছি। গবেষণায় আমাদের এখনো সেই অবস্থান তৈরি হয়নি। কারণ, এটা অনেক ব্যয়বহুল। তবে এটা আসবে, আমরা যাব।
ইস্টার্ন চারটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এখনো সেটাই আছে, ভবিষ্যতে অনুষদ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি না?
অনুষদ বাড়ানো এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে। অনুষদ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এটা আমরা পাব। আমরা যদি স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে যাই, তখন দিয়ে দেবে।

গুণগত দিক থেকে কতটা অগ্রসর হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়? আপনাদের ইস্টার্নের অবস্থান নিয়ে বলুন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একসময় আমিও নাক সিটকাতাম। এরা এদের জার্নিতে এগিয়েছে। এখন একটা শেইফে আসছে। তবে আরও এগিয়ে যেতে হবে। অনেক ছাত্র আছে যারা খুব সহজে পাস করতে চায় সার্টিফিকেটের জন্য, সেই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে। আমাদের ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শতকরা ২৫ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করে। পয়সা দিয়ে শতকরা ২৫ ভাগ ফেল করা মানে কী? আমরা কোয়ালিটি নিয়ে কোনো কমপ্রোমাইজ করছি না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সরকার থেকে কী সুবিধা পাচ্ছেন। আরও কী ধরনের সুবিধা দরকার বলে মনে

করেন?

সরকারি সুবিধা কিছুই নেই। কিন্তু থাকা উচিত। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যদি না হতো, একটা বিশাল জনগোষ্ঠী বিপথে যেত। এখন যেহেতু এটা একটা পার্ট হয়ে গেছে, এটা প্রত্যাখ্যান করার উপায় নেই। কিছুটা আর্থিক সুযোগ-সুবিধাতো দেওয়া উচিত। গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। শুধু বলে এরা ব্যবসা করছে। এটা ঠিক নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনেক আইনের মাধ্যমে টাইট দেওয়া হচ্ছে, এগুলো আরও সহজ করা হোক।

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে কেমন সাফল্য রাখছে। এতে কর্তৃপক্ষ কোনো অবদান রাখছে কি না?

আমার পক্ষে বলা এটা খুব কঠিন। কারণ আমি এসেছি এখনো মাসখানেক হয়নি। তবে আমি খবর নিয়ে শুনেছি, আমাদের রিপ্লেসমেন্ট খুব ভালো। আমি শুনেছি, আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বারে ওয়েল প্লেইসড। আমাদের অ্যালামনাই বেশ ভালো করে করা হয়।

নতুন করে যারা ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে চান, তাদের উদ্দেশে কিছু বলুন।

নতুনদের জন্য আমার বার্তা আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেবে না। ডিগ্রি আর্ন না করতে পারা বা মাঝপথে থেমে যেতে হবে এমন সিদ্ধান্ত কেউ নিয়ো না। কারণ আমার তো সেই সঙ্গতি নেই যে বিনা পয়সায় পড়ানো। নতুন শিক্ষার্থীদের আমি বলব, তোমাদের চ্যালেজ্ঞ অনেক বেশি। কারণ তোমাদের পাবলিক ও অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। সেই অনুযায়ী পড়ালেখা করতে হবে।

উপাচার্য হিসেবে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা বা ভবিষ্যতে এটাকে কোথায় দেখতে চান?

আশা কিংবা স্বপ্নের তো শেষ নেই। আমি চাইব এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু দেশের একটা ভালো বিদ্যাপীঠ নয়, দেশের বাইরেও যেন এটা একটা শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে স্থান করে নেয়।