দোলনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন শত শত মানুষ

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০৩ | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:১০

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
নিজ বাড়িতে পৌঁছলে দোলনকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই

ঢাকা থেকে নিজ এলাকা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌঁছেন আরিফুর রহমান দোলন। তিনি ফরিদপুর-১ (আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালী) আসনে এবার নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পাননি। তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য।

গ্রামের বাড়ি কামারগ্রামে দোলনের পৌঁছার খবরে বাড়ির সামনে জনতার ঢল নামে। মনোনয়ন না পাওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে অনেকে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় সেখানে সৃষ্টি হয় আবেগঘন এক পরিবেশের।

প্রিয় নেতা দোলন এলাকায় আসছেন সেই খবরে বিকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও শত শত মানুষ পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাট এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকেন। তারা কালনা ফেরিঘাট থেকে দোলনকে স্বাগত জানিয়ে কামারগ্রামে নিয়ে আসেন। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, ফরিদপুর-১ আসনের মাটি দোলন ভাইয়ের ঘাঁটি, দোলন ভাই ছিলেন, দোলন ভাই আছেন, দোলন ভাই থাকবেন’ এমন স্লোগান দেন।

জনতার ভালোবাসা দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন দোলনও। তিনি নেতাকর্মীদের বুকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দেন। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দোলন বলেন, ‘পরম করুণাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। আপনারা সবাই ধৈর্য ধারণ করবেন এটি আমার বিনীত অনুরোধ। আমি পরিষ্কারভাবে আপনাদের একটি কথা বলতে চাই- জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমি আপনাদের সঙ্গে থাকবো। সকল ভালো কাজে, ইতিবাচক কাজে আপনারা আমাকে আগের চেয়েও আরো বেশি পাবেন। ’

দোলন বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়া, জনপ্রতিনিধি হওয়া এটিই শেষ কথা নয়। কে কতখানি ভালো কাজ করতে পারল, সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারল, মানুষের পাশে থাকতে পারল, মানুষের সুখে-দুঃখে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারল আমি মনে করি সেটিই বড় কথা। এই অঞ্চলের উন্নয়ন অগ্রগতি, মানুষের সব ধরনের ইতিবাচক কাজ এবং আপনাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে অতীতে আমি যেভাবে আপনাদের পাশে ছিলাম তার চাইতেও আরও ভালোভাবে থাকার অঙ্গীকার করছি।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘মহান রব্বুল আলামিন যা করেন তা মানুষের ভালোর জন্যই করেন। এটি আমরা বিশ্বাস করি। যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি সেহেতু এই বিশ্বাস, আস্থা আরো বাড়াতে হবে। শুধু  আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালী নয় ভালো কাজ দিয়ে সারা দেশে আমাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে ‘

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দোলন বলেন, ‘আমি এমন একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি, আপনারা দাঁড়িয়ে কথা শুনছেন এটি মরহুম কাঞ্চন মুন্সীর বাড়ি। আমি  কাঞ্চন মুন্সীর বংশধর। সমাজকর্মে এই অঞ্চলে কাঞ্চন মুন্সী একটি নক্ষত্র। তিনি কখনও প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতি করেননি। কিন্তু আমি মনে করি- রাজনীতির চাইতেও আরও বড় কিছু করেছেন। মানুষের সেবা করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি একইভাবে সমাজ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই।’

‘আমি মনে করি রাজনীতি হচ্ছে সমাজসেবার আরও বৃহৎ এবং বড় পরিসরে কাজ করার জায়গা। আমার বিবেচনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই ভালো কাজ করার সব চেয়ে বড় প্লাটফর্ম।  আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবো। এটিই হোক আমাদের এক এবং একমাত্র চাওয়া উদ্দেশ্য।’

দোলন বলেন, ‘যেহেতু আমরা দল করি। দলীয় প্রধান একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তই আমাদের মেনে নিয়ে বুকে ধারণ করে চলতে হবে। সাময়িক যতই মন খারাপ হোক না কেন। শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এটিই হোক আমাদের  দৃঢ় অঙ্গীকার।’

(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)