বিএনপির অস্তিত্ব শুধু মিডিয়ায়: খালিদ

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর

‘লুটেরা, দুর্নীতিবাজ বিএনপিকে দেশের মানুষ বর্জন করেছে, দেশের গণমাধ্যম ছাড়া বিএনপির কোথাও অস্তিত্ব নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।  তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বকে বাঁচাতে, বিশৃঙ্খলার অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। রুহুল কবির রিজভী বিএনপির আবাসিক নেতা। মাঝেমধ্যে ভোরে মিছিল করেন আর টিভিতে সাক্ষাৎকার দেন। এখন বিএনপিকে টিভি আর পত্রিকার পাতা ছাড়া কোথাও দেখা যায় না। বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছে মিডিয়া।’

বুধবার জেলার বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে যৌথ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে এবারেরটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করেনি, তারা নির্বাচন প্রতিহত করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে সে সময় নির্বাচনে আনতে খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলেন। সেদিন বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী আচরণ করেছিল- তা সবাই জানেন।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পছন্দের মন্ত্রণালয়গুলো দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে যখন নির্বাচনে আনার চেষ্টা চলছিল, তখন বেগম জিয়া নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ৯৩ দিন অবরোধ করেন। হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। তারা এসব করেছিল এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার মামলা থেকে খালেদা জিয়াকে ও দুর্নীতিবাজ তারেক রহমানকে বাঁচানোর জন্য।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। এবার তারা রাজাকার, আলবদর, আলসামসসহ স্বাধীনতা বিরোধীদেরকে ধানের শীষে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা বলছে, জামায়াতেও নাকি মুক্তিযোদ্ধা আছে। এরপর তারা বলবে জামায়াত বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে।’

বিএনপি আমলের দুর্নীতির সমালোচনা করে খালিদ বলেন, ‘হাওয়া ভবন বিলুপ্ত করে আপনারা প্রমাণ করেছেন হাওয়া ভবন ছিল তারেক রহমানের যত অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাসের রাজত্ব। তারেক রহমান  সে সময় এক লাখ টাকার সিএনজি বিক্রি করেছেন সাত লাখ টাকায়। তাকে টাকা না দিয়ে বগুড়ায়  কোনো সিএসজি রাস্তায় নামতে পারেনি। রাস্তার কার্পেটিং চৈত্র মাসের হাওয়ায় উড়ে যেত।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ড. কামালসহ সবাই সংলাপে সন্তুষ্ট হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তিনি আজ মিথ্যা কথা বলতে বলতে ক্লান্ত। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ৭৫টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন। তারা গণভবনে কী কী দাবি করেছেন তা না বলে মিডিয়ার কাছে বললেন, আমরা গণভবনের পানিও খাব না। কিন্তু তারা সবকিছু খেলেন। সংলাপের পর সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। কাজেই সংলাপও সফল হয়েছে। এখন বলছেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড নেই। আমিও বলছি নেই। যদি রাজাকার, আলবদর, আলসামস, রাজাকার হিসেবে দণ্ডিত অপরাধীদের সন্তানদের ও

বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে নির্বাচন করতে হয়, তাহলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড কীভাবে থাকতে পারে।’

তিনি বলেন,  ‘সংলাপ থেকে বেরিয়ে তারা বললেন- বল প্রধানমন্ত্রী পায়ে। তিনি যে দিকে শট দেবেন,  সে দিকেই গোল হবে। তারা ঠিকই বলেছেন, বল প্রধানমন্ত্রী পায়ে। তিনি ইচ্ছে করলে সংলাপ না করে ফাঁকা মাঠেও গোল দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। এখন কোনো উপায় না পেয়ে কথার বর্ণমালা দিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। ’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আগামী ৩০ তারিখ আপনারা ভোট দেবেন, কেন্দ্র পাহারা দেবেন। আমি আপনাদেরকে আগামী পাঁচ বছর পাহারা দেব। এই এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতে আমি আত্মতুষ্টি নিয়ে এবারের নির্বাচন করতে পারছি না। আমি কথা দিলাম আগামী দ্বাদশ নির্বাচন আপনারা আত্মতুষ্টি নিয়ে করবেন।’

বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী, বিরল পৌরসভার মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৫ডিসেম্বর/এলএ)