জাল ভিসা তৈরির ভয়ংকর ফাঁদ

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা সবাই জাল ভিসা তৈরির ভয়ংকর চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেক বিদেশ গমনেচ্ছু।

বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ৩২টি পাসপোর্ট, সাতটি জাল ভিসা, একটি বিমানের জাল টিকেট, ৩৪ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ১৫টি স্বাক্ষরিত স্ট্যাম্প, একটি ল্যাপটপ, দুইটি কম্পিউটর, একটি কালার প্রিন্টার, পাঁচটি মোবাইল ফোনসহ অসংখ্য জীবন বৃত্তান্ত উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন দলনেতা আসাদুজ্জামান আসাদ, ওসমান গাজী, সিরাজুল ইসলাম, টিপু সুলতান এবং লিটন মাহমুদ।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা আসাদ। তিনি  উত্তরায় একাধিক অফিস খুলে প্রথমসারির জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিতেন। পরে তিনি ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশে গমনে ইচ্ছুকদের প্রলুব্ধ করতেন। এছাড়াও নিজস্ব দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশ গমনে ইচ্ছুকদের অফিসে নিয়ে আসতেন। এরপর বিভিন্ন রকম জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কখনো টুরিস্ট ভিসা, কখনো জাল ভিসা, জাল টিকেট দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসাদ জাল ভিসা করে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখাতেন। এর জন্য তিনি ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। তার ফাঁদে পড়ে অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন।

জাল ভিসা তৈরিতে তাকে সহযোগিতা করতেন ওসমান গাজী, টিপু ও লিটন। চাকরিপ্রার্থীদের তার অফিসে আনার জন্য ওসমান, টিপু ও সিরাজসহ আরও কয়েকজন দালাল হিসেবে কাজ করতেন। চাকরি দেওয়া ও বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রিম হিসেবে তারা দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা, চাকরিপ্রার্থীদের ব্যাংক চেক ও স্বাক্ষরিত স্ট্যাম্প নিজের কাছে রেখে দিতেন। পরবর্তী সময়ে ব্যাংক চেক এবং স্বাক্ষরিত স্ট্যাম্প দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ব্ল্যাকমেইল করতেন।

র‌্যাব জানায়, ওসমান গাজী একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তিনি আল আমিন নামের এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর মাধ্যমে আসাদের সঙ্গে পরিচয় হন। ওসমান গাজী আসাদকে জাল ভিসা বানিয়ে দিতেন। তিনি তিন বছর ধরে জাল ভিসা তৈরি করে আসছেন। জাল ভিসা তৈরির জন্য আসাদ তাকে ভিসাপ্রতি ২০ হাজার টাকা দিতেন।

ওসমান গাজী গ্রেপ্তারকৃত লিটনের মাধ্যমে জাল ভিসা তৈরি করে আসাদকে দিতেন। লিটন এই পর্যন্ত ৪০-৫০টি জাল ভিসা তৈরি করে আসাদকে দিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে সরকারি এবং বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে জনপ্রতি পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা নিত এই চক্রটি।

(ঢাকাটাইমস/০৭ডিসেম্বর/এএ/জেবি)