যেখানে নীল-সবুজের মিতালী

প্রকাশ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৩৩

নবাব আব্দুর রহিম

শহরের ইট-সিমেন্ট আর ধুলাবালির ধূসর জগৎ থেকে দূরে নীল-সবুজের মিতালীর ক্যাম্পাস। আধুনিকতার সরঞ্জামাদি দিয়ে তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনাগুলোও হার মানায় ২১০০ একরের স্নিগ্ধ রূপের মোহে। চট্টগ্রাম নগরী থেকে ছেড়ে যাওয়া শাটল ট্রেন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি তখনই দূরের পাহাড় হাতছানি দেয় মোহনীয় ক্যাম্পাসে আগমনের জন্য। জানায় অভিনন্দন।

বলা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। প্রকৃতির অপূর্ব সাজে গড়ে উঠেছে আয়তনে দেশের সর্ববৃহৎ এই ক্যাম্পাস। পাহাড়, লেক, ঝর্ণা সবই আছে এখানে। আছে ‘চালন্দা গিরিপথ’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য পাহাড়। বিশালকায় পাহাড় আর বৃক্ষরাজির অপূর্ব মিলনের মাঝ দিয়েই সোজা চলে গেছে ‘কাটাপাহাড় সড়ক’। ক্লাস শেষে বন্ধুবান্ধব মিলে ভ্রমণের জন্য বেশ পরিচিতি রয়েছে পাহাড়গুলোর। একেকটির রয়েছে বাহারি নাম। তার মধ্যে একটি সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পেছনে ‘টেলিটক পাহাড়’।

পশ্চিমের পাহাড়গুলো মিলেছে সীতাকু-ের পাহাড়ের সঙ্গে। এরই ফাঁকে গড়ে উঠেছে ঝর্ণা আর গিরিপথ। কলা অনুষদের পাশ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে একটু ভেতরে গেলেই দেখা মিলবে ছোট্ট একটি ঝর্ণার। আবার কলা ঝুপড়ির বাম দিকে পানি ভেঙে এক দেড়ঘণ্টা হাঁটলেই মিলবে চালন্দা গিরিপথ।

এ ছাড়াও থরে থরে সাজানো পাহাড়ের মাঝে পুকুর কিংবা লেকও রয়েছে বেশ কয়েকটি। জীববিজ্ঞান অনুষদের পুকুর আর ফরেস্ট্রি যেন প্রেমিকযুগলের জন্য আদর্শ স্থান। পাহাড়ের কোলে আঁকাবাঁকা রাস্তা আর লাল ইটের আইন অনুষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছে অন্য রূপ।

এর বাইরে চবির প্রকৃতিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে জীববৈচিত্রের সমাহার। পাহাড়ের ফাঁকে মাঝে মাঝেই দেখা মেলে কাঠবিড়ালি আর মায়া হরিণের। সন্ধ্যা হলেই নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির শব্দের প্রতিধ্বনি পাহাড়ে পাহাড়ে মায়া জাগায়। এ ছাড়াও সাপ, বানরসহ রয়েছে হরেক রকমের জীবজন্তু।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ক্যাম্পাস দেখে প্রথম দিনেই যে কেউই মুগ্ধ হন। তেমনই এক মুগ্ধ শিক্ষার্থী নেয়ামত উল্লাহ। তার অনুভূতি, ‘শুধু চালন্দা না, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গাই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। প্রকৃতির অপরূপ মেলবন্ধ এই ক্যাম্পাস। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে যেকোনো জায়গায় ঘোরা যায়। চালন্দার প্রতি মুগ্ধতা অন্যরকম। বছরের শুরুতেই ৪-৫ বার ঘুরে এসেছি দুর্গম চালন্দা গিরিপথ থেকে।’

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/এজেড)