লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই: মাহবুব তালুকদার

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ভোটে সমান সুযোগ না পাওয়ার বিষয়ে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট যে অভিযোগ তুলছে তার কথার প্রতিধ্বনী শোনা গেল নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কথায়। বলেছেন, এই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ অর্থহীন কথায় পরিণত হয়েছে।

সোমবার নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আলোচিত এই নির্বাচন কমিশনার। এর আগে দুইবার তিনি আলোচনায় এসেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে।

রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া বিএনপির তালিকা থেকে নিয়োগ মাহবুব তালুকদার ভোটে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। এ নিয়ে একবার এবং কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না জানিয়ে আরেক দফা দেন নোট অব ডিসেন্ট।

এই নির্বাচন কমিশনারের কাছে কয়েকটি লিখিত প্রশ্ন জমা দিয়েছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। আর তিনি সেগুলোর জবাব দেন প্রশ্ন পড়ে পড়ে।

-আপনার মতো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি?

‘আমি মোটেই মনে করি না নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর‌্যবসিত হয়েছে।

-সিইসি বলেছেন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আপনি তার বিরোধিতা করছেন?

‘আমি কখনই তার (সিইসি) বক্তব্যের বিরোধিতা করি না। তিনি তার কথা বলেন। আমি প্রয়োজনে আমার ভিন্ন মত প্রকাশ করি। আপনার তো সাংবাদিক। আপনার দেশের সব খবর রাখেন। সব কিছু দেখেন। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি না, তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন।’

-‘সারাদেশ থেকে বিরোধী দলের প্রচারে বাধা দেওয়ার নানা অভিযোগ আসছে। এ অবস্থায় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন কি সম্ভব?

‘আমি আশাবাদী মানুষ। এখনও যে সময়টুকু আছে তাতে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। এক্সিকিউভ ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির বিচারকদের আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। আমি মনে করি, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি আাশাব্যঞ্জকভাবে পাল্টে যাবে।’

-সিইসি বলেছেন সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে আপনিও কি তাই মনে করেন?

‘সব দল অংশগ্রহণ করলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়াা একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কি না এবং বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কি না। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই।’

-জনপ্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে?

‘নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না। রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের বাহিনীর সদস্যরা কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে তা তারা বলতে পারবেন।

-বর্তমান অবস্থায় আপনার কি কোন মেসেজ আছে?

‘আমার বক্তব্য হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রার্থী ভোটার এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ আইনের বাইরে যাবে না। আইনকে নিজস্ব ধারায় চলতে দিন। নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলুন। নির্বাচনকে সাফল্যম-িত করতে সহায়তা করুন।