অনশনে অসুস্থ লতিফ সিদ্দিকীর জন্য মেডিকেল বোর্ড

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:৫৪

জাহাঙ্গীর হোসেন

গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে খাট পেতে অনশনে বসা লতিফ সিদ্দিকী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ৮২ তম জন্মদিনে শারীরিক অবস্থা সঙ্গীত হয়ে পড়ার পর তার চিকিৎসায় গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড।

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা এবার টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। গত রবিবার তার প্রচারের গাড়িতে হামলার পর ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে এই অনশন শুরু করেন।

প্রথমে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে পড়া লতিফ পরে আনান চৌকি। শীতের মধ্যেই কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন এই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক মন্ত্রী। সেই সঙ্গে চলে অনশন।

অনশনের তৃতীয় দিনে মঙ্গলবার ভোরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে তাবুর ভেতর পানি পড়তে থাকায় লতিফ সিদ্দিকীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায় নেয়া হয়। এ সময় অসুস্থ বোধ ৮২ বছর বয়সী এই রাজনীতিক করেন।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। আর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নারায়ন চন্দ্র সাহাকে জানান সিভিল সার্জন শরীফ হোসেন খান।

পরে হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট মোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

মোফাজ্জল হোসেন জানান, বোর্ড গঠনের পর বেলা পৌনে দুইটায় লতিফ সিদ্দিকীকে পরীক্ষা করেছে। তাকে অক্সিজেনও দেয়া হয়েছে। তারা লতিফ সিদ্দিকীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ওষুধ দেয়া হলেও তিনি খাচ্ছেন না। ফলে শরীর ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।

এ সময় লতিফ সিদ্দিকী চিকিৎসকদের বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে দুর্বল, মানসিকভাবে দুর্বল নই। আমার দাবি মেনে নেয়া হোক। না হলে মরে গেলেও অনশন ভাঙব না।’

বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দা থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে পাশের একটি খোলা টিনসেডে স্থানান্তর করা হয়।

প্রবীণ এই রাজনীতিকের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী বলেন, ‘আজ তার (লতিফ সিদ্দিকীর) ৮২তম জন্মদিন, জন্মদিনেও তিনি অনশন করছেন। তার হার্টে আগেই দুইটা রিং পরানো আছে। উচ্চ রক্তচাপসহ আরো অসুখ রয়েছে। তিনি তিনবেলা খাবারের আগে-পরে নিয়মিত ওষুধ খান। অনশন শুরুর পর থেকে কিছুই খাচ্ছেন না।’

‘মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। তার গাড়িবহরে হামলা করায় তিনি ওসির অপসারণ চেয়ে তিনদিন ধরে আমরণ অনশন করছেন। এটা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।’

লতিফ সিদ্দিকীর তিন দফা দাবিগুলো হলো কালিহাতীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি যাতে করে এ ধরনের হামলা ঘটনা আর না ঘটে। এজন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোহেল হাজারীকে লিখিত দিতে হবে।

গত রবিবার লতিফের প্রচার গাড়িতে যে হামলা হয়, তার জন্য তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের দায়ী করেছেন।