ঢাকা-১৫

জামায়াত পরিচয় লুকাচ্ছেন প্রার্থী শফিকুর

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৭

তানিম আহমেদ

ঢাকা-১৫ (মিরপুরের একাংশ) আসনে জামায়াতের প্রার্থী শফিকুর রহমান তার নির্বাচনী প্রচারে দলীয় পরিচয় ঘুণাক্ষরেও তুলছেন না। বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে লড়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল নিজেকে কখনো ২০ দল, কখনো ২৩ দল এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।

বিএনপি তার ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতকে যে ২২টি আসনে ছাড় দিয়েছে, তার একটি ঢাকা-১৫। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে আসনটি গঠিত। এখানে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি লড়ছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে।

গত ১০ ডিসেম্বর ভোটের প্রচার শুরুর আগে থেকেই জামায়াত নেতা শফিকুর নানাভাবে জনসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও নানা ছবি বা ভিডিও আপলোড করা হয়েছে তার নানা কর্মসূচির। কিন্তু তাতে জামায়াত পরিচয়টি ঊহ্য রাখা হয়েছে।

বিএনপির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার পর নানাভাবে প্রচারে নেমেছেন শফিকুর ও তার অনুসারীরা। কিন্তু সেখানে তার পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে।’

রাজধানীর অন্যান্য আসনের মতোই এখানেও ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে পোস্টার নেই বললেই চলে। দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা লিফলেট বিতরণ করে ভোট চাইছেন। এসব লিফলেটের শফিকুরের জামায়াত নেতার পরিচয়টি কোথাও লুকানো হয়, কোথাও থাকলেও সেটা ভেতরে দায়সারাভাবে দেওয়া হয়।

বিজয় দিবসে শফিকুরের পক্ষ থেকে ৫৬ সেকেন্ডের একটি রেকর্ড সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করা হয়। এতে নিজেকে ওই আসনের ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শফিকুর।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থীর মিডিয়া সমন্বয়ক আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাদের পক্ষে প্রচারের একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেন।

এই বিজ্ঞপ্তির শিরোনামে লেখা ছিল, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সংসদীয় আসন-১৮৮, ঢাকা-১৫, মিডিয়া সেল, ধানের শীষ প্রতীক।’ এই বিজ্ঞপ্তির কোথাও শফিকুর যে জামায়াতের প্রার্থী, সেই বিষয়টির উল্লেখ নেই। প্রার্থীর পরিচয় হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘ঢাকা-১৫ আসনে ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী।’

জোটবদ্ধ হওয়ার পর ২০০১ ও ২০০৮ সালের দুটি নির্বাচনে জামায়াতকে রাজধানীতে ছাড় দেয়নি বিএনপি। ঢাকায় স্বাধীনতাবিরোধী দলটির ভোটসংখ্যা একেবারেই নগণ্য। ১৯৯৬ সালে সে সময়ে রাজধানীর আটটি আসনেই প্রার্থী দেয় জামায়াত। সর্বোচ্চ ৩.৩৭ শতাংশ ভোট পায় সে সময়ের ঢাকা-৪ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনে। সে সময় অবিভক্ত মিরপুরে প্রদত্ত ভোটের ৩.৩১ শতাংশ পান জামায়াতের প্রার্থী মীর কাসেম আলী।

সে সময় আসনটিতে ভোট পড়েছিল দুই লাখ ৭০ হাজার ৫০৭টি। ৩.৩১ শতাংশ ধরলে জামায়াত পায় আট হাজার ৯৫৪টি। নির্বাচনী আসনটি ভেঙে তিন ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এখন ঢাকা-১৪, ১৫ ও ১৬ আসনে বিভক্ত নির্বাচনী এলাকাটি।

১৯৯৬ সালে সব মিলিয়ে ঢাকা জেলায় জামায়াতের ভোট ছিল ২.৫ শতাংশ।